স্বাস্হ্য ডেস্ক:-
বর্তমান বিশ্বে ডায়াবেটিস একটি বিপাকজনিত রোগ। এর সঠিক প্রতীকার না করার ফলে,এর প্রভাব দিনে দিনে বাড়ছে। মানব দেহের ইনসুলিন নামের হরমোনের সম্পূর্ণ বা অপেক্ষিক ঘাটতির কারণে বিপাকজনিত গোলযোগ সৃষ্টি হয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং এক সময় তা প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে আসে। এইভাবে ডায়াবেটিস রোগ হয়ে থাকে।
ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ
যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষকদল জানিয়েছে-
অনেকেই ধারনা করেন চিনি বেশি খেলে ডায়াবেটিস জন্য ক্ষতিকর।তবে এই ধারনাতি সঠিক নয়।বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস হয় জেনেটিক ও লাইল স্টাইলগত কারণে। তবে তারা এটি স্বীকার করেছেন যে, অতিরিক্ত মিষ্টি খেলে শরীরের ওজন বাড়ে। আর শরীরের ওজন বাড়ার সাথে ডায়াবেটিসের যোগসূত্র রয়েছে।
চিকন মানুষের ডায়াবেটিস হয় না, অনেকেই এই ধারনাটি পোষণ করে থাকেন। এই ধারণাটিও সম্পূর্ণ ভুল। ডায়াবেটিস চিকন, মোটা যেকারোরই হতে পারে। মোটা স্বাস্থ্যের অধিকারী লোকদের ডায়াবেটিস – ২ এর অধিক ঝুকি রয়েছে। এছাড়া পারিবারিক, নৃতাত্বিক সম্পর্ক ও বয়সের কারণেও ডায়াবেটিস হয়।
কেউ কেউ বলেন ডায়াবেটিস তেমন কোনো মারাত্মক রোগ নয়। অনেক ক্ষেত্রে শারিরীক পরিশ্রমের অভাব, ওজন বেশি হয়ে যাওয়া, বয়স, ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারনেও ডায়বেটিস হতে পারে যেমন স্টেরয়েট হরমোন, থাইয়াজাইট ডাইরোটিক্স তাই বংশগত কারন না থাকলেও ওজন বেশি হওয়ার কারনে ডায়বেটিস হতে পারে কারন ওজন বেশি হলে ইনসুলের কার্যক্ষমতা কমে যায়।
ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ
> ক্লান্তি বা দূর্বলতা বোধ করা
> খোশ-পাঁচড়া, ফোঁড়া জাতীয় চর্মরোগ দেখা দেওয়া
> খুব বেশী পিপাসা লাগা
> ক্ষত শুকাতে বিলম্ব হওয়া
> বেশী ক্ষুধা পাওয়া
> ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
যারা দীর্ঘ দিন যাবত এই রোগে ভুগছেন, তাদের হয় তো এই সব লক্ষণ দেখা নাও দিতে পারে। তবে পরীক্ষাতেই ডায়াবেটিস ধরা পড়ে।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের শরীর দুর্বল হলে করণীয়
>ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
ভিটামিনের অভাব আছে কিনা, রক্ত শূন্যতা আছে কিনা, ইলোকট্রোলইট এর অসমাঞ্জস্যতা আছে কিনা তা দেখতে হবে এবং সে অনুসারে চিকিৎসা করলে দূর্বলতা কেটে যাবে।
ভিটামিন বা স্যালাইন খেলে ডায়াবেটিস বাড়বেও না কমবেও না। তাই ভিটামিন খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া প্রচুর শাক সব্জি খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকে এবং প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়। যেমন পাতা জাতিয় শাকসব্জি এবং টক ফল। এছাড়া পানি জাতিয় সব্জিতে সুগার থাকে না এবং এতে প্রচুর ভিটামিন থাকে। যেমন লাউ, কুমরা, পটল, করলা, চিচিঙ্গা এগুলো খেলে ভিটামিনের অভাব পুরোন হয় এবং ডায়াবেটিস এর জন্যও ভালো।
আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক ফেডারেশন সহজ ভাবে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রন করার জন্য এক প্রতিবেদনে বলেছেন, প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম ( দ্রুত হাঁটা – ১মিনিটে ১২০ কদম, সাতার কাটা, সাইকেল চালানো, দৌড়ানো)।তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, সাঁতার এবং সাইকেল ছাড়া নিয়মিত ৩০-৬০ মিনিট হাঁটলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৩৫-৪০ শতাংশ কমে যায়।
নিয়মিত ব্লাড সুগার, বছরে অন্তত একবার এইচবিএ ওয়ানসি, লিপিড প্রোফাইল, সিরাম ক্রিয়েটিনিন, প্রসাবে অ্যালবুমিন পরীক্ষা করান, ব্লাড প্রেসারও দেখতে হবে নিয়মিত।