- প্রকাশিত : ২০১৮-০৫-০৬
- ৭৩১ বার পঠিত
-
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিনিধি:- মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর যে নির্যাতন চলছে, তাতে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয় রোধে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন ওআইসি মহাসচিব ইউসেফ বিন আহমদ আল-ওথাইমি। রোহিঙ্গাদের জন্য আর্থিক সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশের পাশে এগিয়ে আসতে হবে বলেও জানান তিনি।
রবিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা ওআইসির ৪৫তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের শেষ দিনে এ কথা বলেন ওআইসি মহাসচিব।
এদিন রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে একটি মন্ত্রিপরিষদ কমিটি গঠনেরও প্রস্তাব করেছে ওআইসি। রোহিঙ্গা বিষয়ক বিশেষ সেশনে এ প্রস্তাব করা হয়। এ বিশেষ সেশনে গাম্বিয়ার প্রস্তাবিত গোয়েন্দা বিষয়ক একটি রেজ্যুলেশনের সংশোধন চেয়েছে বাংলাদেশ।
ওই রেজ্যুলেশনে বলা আছে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের দায়বদ্ধতার জন্য ওআইসির অ্যাডহক মন্ত্রী পর্যায়ের একটি কমিটি কাজ করবে। বাংলাদেশ অপরাধের পরিবর্তে মানবাধিকার লঙ্ঘন শব্দটির প্রতিস্থাপন করার সংশোধনী চেয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমনি এই সংশোধনীর প্রস্তাব করেন।
এ বিশেষ সেশনে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী এবং সঞ্চালনার দায়িত্ব ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
এতে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর রোহিঙ্গা বিষয়ক বিশেষ দূত বব রে, জাতিসংঘের অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি জেনারেল রশিদ খালিকভ, ওআইসির ইন্ডিপেনডেন্ট হিউম্যান রাইটস কমিশনের সভাপতি, আরাকান ইউনিয়নের পক্ষে ড. ওয়াকার উদ্দিন বক্তব্য রাখেন।
এরপর উন্মুক্ত আলোচনায় ইরাক, মিসর, তুরস্ক, কাজাকিস্তান, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, উগান্ডা, জিবুতি, ও সুদানের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী তার বক্তব্যে বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত চুক্তি করেছি। তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য আমরা তৈরি।’
বব রে বলেন, ‘আমি কক্সবাজার সফর করার সময় রোহিঙ্গারা অনুরোধ করেছিলেন- যেন আমি বিশ্বকে বলি তারা মানুষ। কানাডা দায়বদ্ধতার নীতিতে বিশ্বাসী। আমরা জানি এটি (রোহিঙ্গা সংকট) জটিল একটি প্রক্রিয়া। এটাও মনে করি এ ব্যাপারে দায়বদ্ধতা থাকতে হবে।’
রশিদ খালিকভ বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করছে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ। রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু এবং অনেকে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। জাতিসংঘ ৯৫১ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্রস্তাব করা হয়েছে, যা রোহিঙ্গাদের প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।’
কয়েকদিন আগে ওআইসির ৪৫তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষদের সভায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে ওআইসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছিলেন, ‘মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যখন জাতিগতভাবে নির্মূলের মুখে, তখন ওআইসি নিশ্চুপ থাকতে পারে না।’
মুসলিম বিশ্বের সমৃদ্ধির জন্য ওআইসিকে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে চার দফা প্রস্তাবও উত্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নিউজটি শেয়ার করুন
এ জাতীয় আরো খবর..