- প্রকাশিত : ২০১৮-০৫-০৩
- ৭৯১ বার পঠিত
-
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিনিধি:- সদ্য সমাপ্ত এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ‘উন্মুক্তভাবে’ কেনো প্রশ্ন ফাঁস হয়নি বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি। এজন্য কমিটি কোন বিষয়ের পরীক্ষা বাতিল না করতে অনুরোধও করেছে তাদের প্রতিবেদনে।
আর পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্ন ফাঁস হলে পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণা দেয়া শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এই প্রতিবেদন পেয়ে জানাচ্ছেন, কোনো পরীক্ষাই বাতিল হবে না।
যুক্তি হিসেবে মন্ত্রী বলছেন, ফেসবুকের কিছু ‘ক্লোজড’ গ্রুপে এই প্রশ্ন এসেছে। তার পরীক্ষার আগে আগে আসা প্রশ্ন পেয়ে শিক্ষার্থীদের খুব বেশি লাভ হয়নি। কাজেই অল্প কিছু ছেলেমেয়ের কারণে সবার জন্য আবার পরীক্ষা নেয়ার মানে হয় না।
মন্ত্রী জানান, প্রতিবেদন অনুযায়ী মোট ১২টি বিষয়ে ৩০ নম্বরের এমসিকিউএর প্রশ্ন সামাজিক মাধ্যমে অল্প কিছু সময় আগে এসেছে। কিন্তু এবার আঘা ঘণ্টা আগে পরীক্ষার কেন্দ্রে ঢুকার বাধ্যবাধকতা ছিল। তাই এই প্রশ্ন পেলেও খুব একটা লাভ হয়েছে বলে মনে করেন না তিনি।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সম্মেলন কক্ষে এই সুপারিশ প্রতিবেদন হাতে নিয়ে তা অনুমোদনের ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কতিপয় ক্লোজ গ্রুপে এ প্রশ্ন শেয়ারের ঘটনা ঘটেছে। যেখানে যদিও বেশিরভাগ গ্রুপের প্রশ্ন সঠিক ছিল না।’
‘কেউ কেউ সাজেশন আকারে প্রশ্ন দিয়েছে। সেখান থেকে কিছু প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবে কমন পড়েছে। ক্লোজ গ্রুপের মাধ্যমে প্রশ্ন পাওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধাভোগী পরীক্ষার সংখ্যা মোট পরীক্ষার্থীর তুলনায় ০.২৫ শতাংশ। ফলে ফাঁসের সুবিধাভোগী চার থেকে পাঁচ হাজার পরীক্ষার্থীর কারণে ২০ লক্ষাধিক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা পুনরায় গ্রহণ করা হবে না।’
গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি অবধি চলা এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রায় প্রতিটি বিষয়েই এমসিকিউ বা নৈর্ব্যক্তিকের প্রশ্ন আগেভাগেই এসেছে সামাজিক মাধ্যমে। এই প্রশ্নগুলো মিলেছে পরীক্ষা শুরু হওয়ার আধা ঘণ্টা থেকে দুই ঘণ্টা আগে।
৪ ফেব্রুয়ারি সে সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরকে প্রধান করে গঠন করা হয় একটি তদন্ত কমিটি। ওই কমিটিতে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনার সত্যতার পাশাপাশি করণীয় জানাতে দায়িত্ব দেয়া হয়। কমিটিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ছাড়াও ছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, এসএসসি পরীক্ষায় ১৭ টি বিষয়ের মধ্যে ১২টি বিষয়ে ৩০ নম্বরের নৈর্ব্যত্তিক (এমসিকিউ) অংশের কেবল খ সেটের প্রশ্ন ফেসবুকে ফাঁস হয়েছে। তবে ৭০ নম্বরের কোন বিষয়ের সৃজনশীল অংশের প্রশ্ন ফাঁস হয়নি।
‘ফলে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পূর্বে সকল পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ বাধ্যতামূলক থাকায় যারা প্রশ্ন পেয়েছে তারা উত্তর প্রস্তুতের জন্য সর্বোচ্চ ১০-২০ মিনিটের মতো সময় পেয়ে থাকতে পারে।’
৩০ নম্বরের এই প্রশ্ন পেলেও সামগ্রিক ফলাফলে তেমন প্রভাব পড়ার আশঙ্কা নেই বলেও দাবি করেছেন নাহিদ। বলেন, ‘এত স্বল্প সময়ের মধ্যে ৩০টি এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করা সহজ নয়। ফলে তাদের সামগ্রিক ফলাফলে এটা খুব বেশি প্রভাব রাখতে পারবে না।’
‘এজন্য কমিটি যেহেতু কোন পরীক্ষা বাতিলে সুপারিশ করেনি তাই কোন পরীক্ষা বাতিল হবে না। আমরা তাদের দেয়া এই প্রতিবেদন অনুমোদন করে দিচ্ছি।’
প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় অবশ্য আরও দুটি কমিটি কাজ করেছে হাইকোর্টের নির্দেশে। এক একটি করা হয়েছে একজন জেলা জজের নেতৃত্বে প্রশাসনিক কমিটি এবং অপরটি করা হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ কমিটি। তারা কী প্রতিবেদন দিয়েছে সেটি এখনও জানায়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
নিউজটি শেয়ার করুন
এ জাতীয় আরো খবর..