নীলফামারী জেলায় ৭৯৫টি পূজামণ্ডপে শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। আজ শুক্রবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন মণ্ডপে মণ্ডপে ভক্তদের পূজা-অর্চনার ব্যস্ততা দেখা গেছে। জেলা শহরের আনন্দময়ী কালিবাড়ি মন্দিরে আজ শুক্রবার পূজা শুরু হয় ভোর পাঁচটায়। এরপর সকাল সাড়ে ছয়টা ও সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় অঞ্জলী প্রদান।
আনন্দময়ী কালিবাড়ি মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার সাহা জানান, শুক্রবার মহা অষ্টমী শেষে নবমীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে ভোর পাঁচটায় শুরু হয় পূজা-অর্চনা। সকালে অষ্টমী পূজায় দুইদফায় অঞ্জলীর আয়োজন করা হয়। এরপর সকাল সাতটা ৪১ মিনিটে নবমী পূজা অনুষ্ঠান শেষে সকাল ১০টার দিকে নবমীর অঞ্জলী অনুষ্ঠিত হয়। অঞ্জলী শেষে ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে অনুষ্ঠিত হবে আরতি প্রতিযোগিতা। শনিবার দশমী পূজার মধ্যদিয়ে শেষ হবে আনুষ্ঠানিকতা। রোববার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে প্রতিমা বিসর্জন হবে।
এদিকে, আজ শুক্রবার সকাল থেকে শহরের আনন্দময়ী কালিবাড়িসহ বড়বাজার, ডালপট্টি, শিব মন্দির মিলনপল্লী পূজা মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে ভক্ত এবং দর্শনার্থীর উপস্থিতি। অনেকেই পরিবার নিয়ে বিভিন্ন মণ্ডপে ঘুরেছেন।
নীলফামারী জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার ছয় উপজেলায় এবার ৭৯৫টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে ডিমলা উপজেলায় ৭৬টি, ডোমার উপজেলায় একশ’টি, জলঢাকায় ১৬০টি, কিশোরগঞ্জে ১২০টি, নীলফামারী সদর উপজেলায় ২৬৪টি, সৈয়দপুর উপজেলায় ৭৫টি পূজামণ্ডপ রয়েছে। সরকারিভাবে প্রতিটি মণ্ডপে পাঁচশ’ কেজি করে মোট ৩৯৭ দশমিক ৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব আয়োজনে মাঠে রয়েছে জেলা প্রশাসন-সহ পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি প্রতিটি মণ্ডপে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে আনসার বাহিনীর সদস্যরা।
অন্যদিকে, জেলার সীমান্ত এলাকার ১২টি মণ্ডপে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছে বিজিবি’র ৫৬ নীলফামারী ব্যাটালিয়ন। বিজিবি নীলফামারী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা ইতিমধ্যে সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, বিজিবি সদস্যরা উৎসবমুখর পরিবেশে উৎসব সম্পন্নে নিরবচ্ছিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন।
নীলফামারীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম জেলার বিভিন্ন উপজেলার পূজামণ্ডপ পরিদর্শণ করেছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) ডোমার উপজেলায় বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছি। আজ শুক্রবার বিকেলে ডিমলা উপজেলায় আছি। সন্ধ্যায় সৈয়দপুর উপজেলার বিভিন্ন মণ্ডপে পরিদর্শন করবো। এখন পর্যন্ত কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই, আশাকরি হবে না। আনন্দঘন পরিবেশে সবজায়গায় শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে’।