গত মৌসুম করোনা মহামারীর কারনে ইউরোপীয়ান ফুটবলের পাঁচটি শীর্ষ লিগে সব মিলিয়ে ২ বিলিয়ন ইউরো আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেপিএমজির এক রিপোর্টে বলা হয়েছে।
করোনার কারনে সবগুলো লিগেই স্টেডিয়ামে দর্শক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। আর সে কারনেই ম্যাচের দিনগুলোতে বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে শীর্ষ ক্লাবগুলো। এর আগে ২০১৯/২০ মৌসুমে প্রথম যখন করোনা হানা দেয় তার তুলনায় এই ক্ষতির পরিমান ছিল ৫০০ মিলিয়ন ইউরো বেশী। ২০২০ সালের মার্চ থেকে প্রথমবারের মত সব ধরনের লিগে দর্শক প্রবেশের ব্যপারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
ইউরোপের এই শীর্ষ পাঁচটি লিগ হচ্ছে ইংল্যান্ডের প্রিমিয়ার লিগ, ইতালিয়ান সিরি-এ, স্প্যানিশ লা লিগা, জার্মানীর বুন্দেসলিগা ও ফরাসি লিগ ওয়ান।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘শীর্ষ পাঁচটি লিগে যেহেতু ২০২০/২১ মৌসুমে ম্যাচ থেকে কোন ক্লাবই কোন আয় করতে পারেনি সে কারনে এই ক্ষতিটা প্রত্যাশিত ছিল। সব মিলিয়ে এই ক্ষতির পরিমান ২ বিলিয়ন ইউরো যা কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে।’
২০১৯/২০ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল বুন্দেস লিগায় । জার্মান লিগে সাধারণত সবচেয়ে বেশী দর্শকের সমাগম হয়ে থাকে। সেদিক থেকে এই লিগের রাজস্ব আয় প্রায় ১৫৭ ইউরো কমে গিয়েছিল। এরপরই রয়েছে ফরাসি লিগ ওয়ান। প্রথমবার ৪৮ মিলিয়ন আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছিল এই লিগ।
রিপোর্টে আরো দাবী জানানো হয়েছে বিশ্বের পাঁচটি বড় ক্লাবের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতির মুখে পড়েছে বার্সেলোনা। শুধুমাত্র এই ক্লাবটির ক্ষতি হয়েছে ৩৯ মিলিয়ন ইউরো।
যদিও পাঁচটি লিগের মধ্যে কিছুটা হলেও ব্যতিক্রম প্রিমিয়ার লিগ। ২০২০/২১ মৌসুমে তারা কিছু দর্শকের উপস্থিতির অনুমতি দিয়েছিল।
ক্লাবগুলোর এই আর্থিক ক্ষতি চলতি মৌসুমেও অব্যাহত থাকবে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এবারের মৌসুমে অন্যান্য লিগগুলোর বিপরীতে শুধুমাত্র প্রিমিয়ার লিগ ও লিগ ওয়ান তাদের স্টেডিয়ামে পরিপূর্ণ দর্শকের অনুমতি দিয়েছে। আগামী ২৯ আগস্ট পর্যন্ত লা লিগায় অস্থায়ী কিছু বিধিনিষেধ আছে, যা সেপ্টেম্বরে আবারো পর্যবেক্ষন করা হবে। এই সময়ের মধ্যে লা লিগার ম্যাচগুলোতে ৪০ শতাংশ দর্শক প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে স্প্যানিশ সরকার। স্টেডিয়ামে প্রবেশকৃত দর্শকদেও মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ইতালিয়ান সিরি-এ লিগে বর্তমানে স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতার অর্ধেক দর্শক প্রবেশের অনুমতি রয়েছে। স্টেডিয়ামে প্রবেশের পূর্বে সমর্থকদেও হয় পূর্নাঙ্গ ভ্যাক্সিনেশন সনদ কিংবা পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একইভাবে বুন্দেসলিগায় সব মিলিয়ে ২৫ হাজার দর্শক মাঠে প্রবেশ করতে পারবে।
রিপোর্টের সূত্রমতে চলতি বছর ইউরো টুর্নামেন্টটি দর্শক মাঠে ফেরানোর ব্যপারে এসিড টেস্ট হিসেবে কাজ করেছে। যদিও ইউরোর কিছু ভেন্যুতে পরবর্তীতে কোভিড আক্রান্তের খবরে এই সিদ্ধান্ত অনেকটাই নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইউরো আয়োজনের সময় ইউরোপে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়া উয়েফাকে দায়ী করেছিল।