আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডের (পিএলএফএসএল) জন্যে পরিচালনা বোর্ড গঠন করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
সমস্যায় পড়া এ আর্থিক প্রতিষ্ঠানটিকে অবসায়ন না করে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে এই পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়।
বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কমিটি গঠন করে দিয়েছেন।
সুপ্রিমকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামাল-উল আলমকে চেয়ারম্যান এবং আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ জালাল উদ্দিনকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক করে ১০ সদস্যের এই বোর্ড গঠন করা হয়।
এ পরিচালনা পর্ষদের অন্য সদস্য হলেন- সাবেক সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার, সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হাসান শাহীদ ফেরদৌস, পুবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল হালিম চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) কাজী তৌফিকুল ইসলাম, নুর-এ-খোদা আব্দুল মবিন এফসিএ, মওলা মোহাম্মদ এফসিএ, সঞ্চয়কারীদের প্রতিনিধি ড. নাশিদ কামাল ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নুরুল কবির।
এ প্রতিষ্ঠানে আমানতকারীদের করা আবেদনের পর সব পক্ষের বক্তব্য শুনে হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানটিকে অবসায়ন না করে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে পরিচালনা পর্ষদটি গঠন করে দিলেন।
আদালতে আমানতকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আহসানুল করিম। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার তানজীব-উল আলম। আর পিপলস লিজিংয়ের সাময়িক অবসায়কের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মেজবাহুর রহমান। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
ধারাবাহিক লোকসানে থাকা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং ২০১৪ সালের পর থেকে আমানতকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। এরপর ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই থেকে দেশের পুঁজিবাজারে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন বন্ধ হয়। একপর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা বোর্ড ভেঙে নতুন বোর্ড গঠন করে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তাতেও প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক অবস্থার উন্নতি না হলে গত বছরের জুলাই মাসে প্রতিষ্ঠানটি অবসায়নের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন সাময়িক অবসায়ক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপ মহাব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান খানকে নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ দৈন্যদশায়র মধ্যেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। পরবর্তীতে পিপলস লিজিংয়ের ভুক্তভোগী আমানতকারীরা টাকা ফেরত পেতে আইনি উদ্যোগ নেন। একপর্যায়ে এই আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ লাখের বেশি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হওয়া ২৮৬ জনকে তলব করে হাইকোর্ট।
এরপরই হাইকোর্টে হাজির হয়ে কয়েকজন ঋণ খেলাপি ঋণের টাকা পরিশোধ করে। অন্যদিকে হাইকোর্টের তলবে হাজির না হওয়া ১২২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
২৮ জুন পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডকে পুনরুজ্জীবিত করার আদেশ দেয় হাইকোর্ট বেঞ্চ। ওই আদেশে পরিচালনা পর্ষদ গঠনে করার কথা বলা হয়। সে অনুযায়ী আদালত পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয়।