২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বান্ধব উল্লেখ করে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) বলেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের জনগণের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেট সার্বিকভাবে ব্যবসা ও বিনিয়োগ বান্ধব হয়েছে। তবে বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মনে করছে সংগঠনটি।
শনিবার রাজধানীর ফেডারেশন ভবনে বাজেটোত্তর এক সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এসব কথা বলেন। এ সময় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভপাতি রিজওয়ান রাহমান, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) সভাপতি নিহাদ কবির, এফবিসিসিআই জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে আরও সুদৃঢ় করার প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে বজেটে। তিনি বলেন, বাজেটে বিদ্যুৎ, জ্বলানি ও যোগাযোগসহ নানা অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে যা বিনিয়োগ, শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান প্রক্রিয়াকে গতিশীল করবে।
জসিম উদ্দিন বলেন, বিনিয়োগ সম্প্রসারণ ও দেশীয় শিল্প বিকাশে করপোরেট করহার কমানোর পাশাপাশি ক্লাউড সার্ভিস, সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন, ই-লানিং, ই-বুক পাবলিকেশন, মোবাইল এপ্লিকেশন, ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস ও আইটি ফ্রিল্যান্সি সেবার আয়কে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কর অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। একইসাথে মেইড ইন বাংলাদেশ ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠায় অটোমাবাইল থ্রি হুইলার ও ফোর হুইলার উৎপাদনকারী কোম্পানি, গৃহস্থলী সরঞ্জাম ও কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদন শিল্পে ১০ বছরের কর অব্যহতি দেয়া হয়েছে। এতে দেশীয় শিল্পের বিকাশ ও বাণিজ্য সহজীকরণের ক্ষেত্রে উন্নতি হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি মনে করেন বিকল্প গণপরিবহন হিসেবে মাইক্রোবাস আমদানিতে শুল্ক কমানো, নারী উদ্যোক্তাদের করমুক্ত টার্ণওভার ৭০ লাখ টাকা করা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের শিল্প যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক ছাড় অত্যন্ত ভাল উদ্যোগ। তবে তিনি করোনা মহামারির ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তাদের দিকে সরকারের আরও নজর দেয়ার প্রস্তাব দেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাজেটের আকার বাড়ানো হয়েছে, যেটা আমাদের প্রয়োজন ছিল। তবে তিনি মনে করেন এই বড় আকারের বাজেট বাস্তবায়ন একটি চ্যালেঞ্জ। বাজেট বাস্তবায়ন সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এর পাশাপাশি বাজেটে অগ্রীম আয়কর প্রত্যাহার পুনবিবেচনার দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন, ব্যবসার খরচ বাড়িয়ে দেওয়ার কারণে অগ্রিম আয়কর ৫ শতাংশ ও ভ্যাটের আগাম কর ৪ শতাংশ সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছিল এফবিসিসিআই। বাজেটে আগাম কর ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে এবং অগ্রিম আয়কর সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ আরোপ করা হবে। এতে ব্যবসা বাণিজ্য কঠিন হবে এবং ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় বহুগুন বাড়বে।
জসিম উদ্দিন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয়ের উপর ১৫ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহার এবং এছাড়া ৩ কোটির বেশি আয়ের ক্ষেত্রে করহার কমিয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন