×
ব্রেকিং নিউজ :
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের আমরা যেন ভুলে না যাই : নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কারের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে : জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার হবিগঞ্জে মা-মেয়ে হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ওএমএস-এর আওতায় ৪৫ পয়েন্টে ভর্তুকি মূল্যে কৃষিপণ্য বিক্রি হচ্ছে ‘অপশক্তির দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ নয়’ আমিরাতের শীর্ষ কোম্পানিসমূহ বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী : রাষ্ট্রদূত ভারত ঐতিহ্যগত ওষুধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে জ্ঞান বিনিময়ে আগ্রহী নদী বাঁচাতে আবরার ফাহাদের দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের পথ নির্দেশ করবে : নাহিদ ইসলাম দুদক চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনারের পদত্যাগ
  • প্রকাশিত : ২০২১-০৫-২৩
  • ৫৩৯ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

 বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) আয়োজিত ‘রি-ডিজাইনিং অ্যা সেকেন্ড স্টিমুলাস প্যাকেজ ফর ইকোনমিক রিকোভারি অব সিএমএসএমইজ’ বিষয়ক ভার্চুয়াল সংলাপে বক্তারা প্রণোদনা প্যাকেজে কটেজ ও মাইক্রো উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে তাদেরকে আলাদাভাবে বিবেচনা করার পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের বাইরে তাদের জন্য আলাদা লক্ষ্য স্থির করতে হবে ।
সংলাপটির মূল উদ্দেশ্য হলো আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সহায়তায় বিল্ড ও পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে গৃহীত ‘কোভিড স্টিমুলাস অ্যান্ড লিংকস টু এমপ্লয়মেন্ট, কনজাম্পশন, অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট: দ্য বাংলাদেশ এক্সপেরিয়েন্স, গ্লোবাল লেসনস, অ্যান্ড প্রায়োরিটিজ ফর নেক্সট রাউন্ড অব সাপোর্ট’ শীর্ষক গবেষণার জন্য সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের মতামত গ্রহণ এবং গবেষণা চূড়ান্তকরণ।
রোববার আয়োজিত এই সংলাপে সভাপতিত্ব করেন বিল্ডের চেয়ারপার্সন আবুল কাসেম খান।
মূল উপস্থাপনায় বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, কোভিড মহামারীর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের সামগ্রিক বেসরকারি খাত। কর্মসংস্থানের উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অর্থনীতি পুনরূদ্ধারে শুরু থেকেই সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে সরকার। কোভিডের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় সরকার এখ পর্যন্ত ১ লাখ কোটি টাকার বেশি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। যদিও এসব প্রণোদনা প্যাকেজের একটা বড় অংশ এখনো পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি।
তিনি আরও বলেন, কোভিডে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা (সিএমএসএমই)। করোনা মহামারীর পর এসএমই খাতের সামগ্রিক রাজস্ব কমেছে ৬৬ শতাংশ, ৩৯ শতাংশ এসএমই তাদের বেতন কেন্দ্রিক ব্যয় ২৫-৩০ শতাংশ কমিয়ে এনেছে এবং ৩৩ শতাংশ এসএমই অতিরিক্ত ব্যয়ভার বহন করতে বাধ্য হচ্ছে। এ খাতের পুনরূদ্ধারে ২০ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা প্রণোদনা সহায়তা পায়নি।
বিল্ডের চেয়ারপার্সন আবুল কাসেম খান অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রক্রিয়া সহজীকরণের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ডকুমেন্টেশনের লম্বা ও জটিল হলে উদ্যোক্তাদের ব্যয় বেড়ে যাবে। তাঁর মতে, ডকুমেন্টেশনের ব্যয়ের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় অতি-ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা। ব্যবসা পরিচালনার জন্য ২৫টি নথিপত্রের ব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়া তাদের জন্য খুবই কঠিন ব্যাপার।
তিনি এসএমইদের জন্য আপগ্রেডেড ডেটা অ্যানালিটিকস ব্যবহার করে উচ্চমানের ডাইনামিক ডেটাবেজ তৈরির সুপারিশ করেন, যাতে করে এটিকে মানসম্পন্ন এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করা যায়। তিনি ৬৪ জেলায় কার্যরত জেলাভিত্তিক চেম্বারগুলোকে সিএমএসএমইদের ডেটাবেজ তৈরিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সংলাপে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রহমান বলেন, এসএমই সংজ্ঞা স্পষ্ট করতে হবে এবং অর্থনৈতিক বিবেচনার পাশাপাশি গানিতিক বিবেচনাকেও মাথায় রাখতে হবে। এসএমইদের সহায়তা প্রদানে ক্যাশ ফ্লো ভিত্তিক আর্থিক লেনদেনের উপর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া এসএমইদের ডেটাবেজ তৈরি ও ডকুমেন্টেশনের ব্যয় কমানোর উপরও গুরুত্ব দেন তিনি।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, এসএমইদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ প্রাপ্তি সহজ করতে ব্যাংক-ক্লায়েন্ট রিলেশনের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সমাধান করতে হবে। ব্যাংকের ফোকাল পয়েন্ট ও শাখাগুলোর মধ্যে যথাযথ সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে। এসএমই ব্যাংকের জন্য জোর দাবি জানাতে হবে। ব্যাংকারদের দৃষ্টিবঙ্গিতে পরিবর্তন আনতে হবে।
তিনি জানান, প্রণোদনা প্যাকেজের সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হয়েছে নারী উদ্যোক্তারা। প্রথম প্রণোদনা প্যাকেজের মাত্র ৫ শতাংশ পেয়েছে নারী উদ্যোক্তারা। তাঁর মতে, দ্বিতীয় প্রণোদনা প্যাকেজে নারী উদ্যোক্তাদের বরাদ্দ ৩০ শতাংশ হওয়া প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজার (এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্ট) হুসনে আরা শিখা প্রণোদনা সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য সিএসএসএমইদের আলাদাভাবে বিবেচনা করার পরামর্শ দেন।
ইস্টার্ন ব্যাংকের হেড অব এসএমই সালেকীন ইব্রাহিম বলেন, ব্যাংকগুলো ঋণঝুঁকিতে রয়েছে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম ঘোষণা করেছে। এসএমইদের জন্য প্রণোদনার অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমকে অবশ্যই সম্প্রসারণ করা জরুরি।
ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অব ইমার্জিং কর্পোরেট ইন্দ্রজিত সুর বলেন, এসএমইদের অর্থায়নে ব্যাংকের মনোভাব অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। এক্ষেত্রে বেশকিছু জায়গায় কাজ করার রয়েছে। তিনি বলেন, ওয়ান স্টপ সার্ভিস গঠনের মাধ্যমে সদস্যদের অর্থায়ন পাওয়ার উপযোগী করতে ব্যবসাযী সংগঠনগুলোকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
চিটাগং উইম্যান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মনোয়ারা প্রণোদনা প্যাকেজে নারী উদ্যোক্তাদের বঞ্চিত হওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। নারী উদ্যোক্তাদের যথাযথ সেবা প্রদানের জন্য ব্যাংকারদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলেন তিনি। তাঁর মতে, প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ বিতরণে নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠনগুলো যুক্ত থাকলে নারী উদ্যোক্তা আস্থা খুঁজে পাবেন। সমন্বিত পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন নিশ্চিত করা গেলে প্রনোদনা প্যাকেজ বিতরণ প্রক্রিয়ার বর্তমান জটিলতা দূর হবে বলে জানান তিনি।
বিসিকের জেনারেল ম্যানেজার অখিল রঞ্জন তরফদার বলেন, তফসিলি ব্যাংকগুলোর ব্যাংকারদের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারের সচেতনতার অভাব রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে এক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে যাতে সকল প্রজ্ঞাপন তফসিলি ব্যাংকগুলোতে ঠিকমত পৌঁছায়। এছাড়া প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ বিতরণে বিসিক, পিকেএসএফ সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বাড়ানোর বিষয়ে জোর দেন তিনি।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রোগ্রাম অফিসার মোহাম্মদ নাজমুল অভি হোসেন বলেন, এসএমই খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের ভর্তুকি প্রদান করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যবসায় উদ্যোগগুলোকে শণাক্ত করতে হবে এবং এদেরকে যথাযথ সহায়তা ও ভর্তুকি প্রদান করতে হবে।
জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কোঅর্ডিনেটর অফিসের (ইউএনআরসিও) ডেভেলপমেন্ট কোঅর্ডিনেটর অফিসার মাজেদুল ইসলাম বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজের সঠিক বাস্তবায়নে জেন্ডার-ভিত্তিক ডেটাবেজ প্রস্তুত করতে হবে। একই সঙ্গে ব্যাংকিং প্রক্রিয়াকে সহজতর করতে হবে। প্রণোদনার অর্থ বিতরণে ক্ষুদ্র আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিবেচনায় নিতে হবে। ঋণ মনিটরিংয়ের জন্য মাল্টি স্টেকহোল্ডার টাস্কফোর্স গঠন করা জরুরি।
সংলাপে সমাপনী বক্তব্য দেন বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফেরদৌস আরা বেগম। তিনি জানান, কোভিডের প্রেক্ষিতে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে যৌথ গবেষণা পরিচালনা করছে বিল্ড ও আইএলও। জুনের মাঝামাঝি সময়ে এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশে একটি ওয়েবিনার আয়োজন করা হবে। তিনি বলেন, এসএমইদের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধিতে একান্তভাবে কাজ করবে বিল্ড।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat