দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৯৪তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪৭৩ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৬ জন কম মৃত্যুবরণ করেছে। গতকাল ৩০ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭ হাজার ৪৫২ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। গত ২১ ডিসেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪৭৩ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৫১ হাজার ৯৬১ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। গতকাল সুস্থতার হার ছিল ৮৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১১ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১২ হাজার ৬৫০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৪৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ৯ হাজার ৯১২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ৮৩৪ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ১২ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ৩১ লাখ ৭১ হাজার ৯১০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫ লাখ ৯ হাজার ১৪৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার ২৫ লাখ ১৭ হাজার ৬৮৩টি হয়েছে সরকারি এবং ৬ লাখ ৫৪ হাজার ২২৭টি হয়েছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ০৫ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ০৮ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৫ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ৯ হাজার ৬৬১ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৩ হাজার ৩৪৪টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের সরকারি ১০২ ও বেসরকারি ৬৫টিসহ ১৬৭টি পরীক্ষাগারে (এন্টিজেন টেস্টসহ) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৬৫০ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ৯ হাজার ৯১২ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ২ হাজার ৭৩৮টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৯৮৯ দশমিক ৬০ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২৬৫৩ দশমিক ৮১ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৪৩ দশমিক ৭৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ২৪ জনের মধ্যে পুরুষ ১৬ জন, আর নারী ৮ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৬৭৫ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৭৭৭ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ১৫ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ২৩ জন হাসপাতালে এবং ১ জন বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের বছরের ১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৭ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২৪ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৪ জন; যা দশমিক ৪৬ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৭ জন; যা দশমিক ৭৬ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৫৯ জন; যা ২ দশমিক ১৩ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৭৩ জন; যা ৫ দশমিক ০১ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৮৭৭ জন; যা ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৮৯৪ জন; যা ২৫ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৪ হাজার ৫৮ জন; যা ৫৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ জন এবং খুলনা ও রংপুর বিভাগে ২ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৪ হাজার ৮১ জন; যা ৫৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৩৮৯ জন; যা ১৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৪৩১ জন; যা ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৫২৫ জন; যা ৭ দশমিক ০৫ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২৩৬ জন; যা ৩ দশমিক ১৭ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৯০ জন; যা ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ৩৩৬ জন; যা ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৬৪ জন; যা ২ দশমিক ২০ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ২৮৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৫৭২ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৭১২টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ২৯০টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৯৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৯৩টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬৮৭টি, ভর্তিকৃত রোগী ২৭০ জন ও শয্যা খালি আছে ৪১৭টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৪৫টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৮ জন ও শয্যা খালি আছে ২৭টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৫৩৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৬৯৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৮৪৩টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২৪৭টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮০ জন ও শয্যা খালি আছে ১৬৭টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১০ হাজার ৫১০টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৪৩৮ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৭২টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৮২টি, রোগী ভর্তি আছে ২৯৫ জন এবং খালি আছে ২৮৭টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৫১৬টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬৭৮টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৬৩৯টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৪৭৩ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ১৩৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৬৭ জন, রংপুর বিভাগে ২৪ জন, খুলনা বিভাগে ৪৫ জন, বরিশাল বিভাগে ১৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫১ জন, সিলেট বিভাগে ২৬ জন এবং ময়মনসিংহে ৯ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৪১০ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৫৯ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৬ লাখ ১ হাজার ৫৩৩ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৬২ হাজার ৬৫৭ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৮ হাজার ৮৭৬ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১২৩ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৩১ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯৫ হাজার ৮৬১ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৮৪ হাজার ১৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১১ হাজার ৮৪৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ১৫৯ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১৪ লাখ ৮ হাজার ৪৬৯ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ১ হাজার ২৮০টি, ৩৩৩ এই হটলাইন নম্বরে ৪ হাজার ৭৭২টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১১১টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ১৮৩টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৩২ লাখ ৫৬ হাজার ৪০টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ২ হাজার ৯৫৩ জন, এবং এ পর্যন্ত ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৩০৯ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১৮ লাখ ১৩ হাজার ৩৬০ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৮০ হাজার ২৩১ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭ কোটি ৮৬ লাখ ৪ হাজার ৫৩২ জন এবং ১৭ লাখ ৪৪ হাজার ২৩৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।