দেশে গত ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ৩৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন, পাশাপাশি সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫৩৯ জন।গতকালের চেয়ে আজ ৬ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ২৯ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ৬৪৪ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত ১৪ নভেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ হাজার ৩৭২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৫২৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৭৩৭ জন বেশি শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৩ হাজার ৭৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৭৮৮ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১৩ দশমিক ০২ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ৩ দশমিক ৪১ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৭ লাখ ৭২ হাজার ৭০১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৯৩২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ। গতকালও এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫৩৯ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৮০ হাজার ৭১১ জন। আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১১ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৫৬৫ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৩ হাজার ৮৬৪ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৭০১টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৮টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ৩৭২ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৩ হাজার ৭৩৭ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৬৩৫টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৭২৯ দশমিক ৯৫ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২২৩৫ দশমিক ৪৫ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৯ দশমিক ০১ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩৫ জনের মধ্যে পুরুষ ২৪ জন, আর নারী ১১ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৯৯ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৫৪৫ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩৫ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের বছরের ১ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের বছরের ৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৮ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২০ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩২ জন; যা দশমিক ৪৮ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৪ জন; যা দশমিক ৮১ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৪৭ জন; যা ২ দশমিক ২১ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৪২ জন; যা ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৮০২ জন; যা ১২ দশমিক ০৭ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৭৩৬ জন; যা ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৫৩১ জন; যা ৫৩ দশমিক ১৫ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ২৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪ জন, খুলনা বিভাগে ২ জন এবং চট্টগ্রাম, রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৫৬৫ জন; যা ৫৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২৫৭ জন; যা ১৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৪০৬ জন; যা ৬ দশমিক ১১ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৯৮ জন; যা ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২১৯ জন; যা ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৬৫ জন; যা ৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ৩০১ জন; যা ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩৩ জন; যা ২ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৪০৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ২০৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ১৯৬টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৬টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২২৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৯১টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৭০টি, ভর্তিকৃত রোগী ২২৯ জন ও শয্যা খালি আছে ৫৪১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৮ জন ও শয্যা খালি আছে ২১টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ১৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৩৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৬২৭টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৭৫ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩৬টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৩৩৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৯৭৪ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৩৬৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৬টি, রোগী ভর্তি আছে ৩১৮ জন এবং খালি আছে ২৪৮টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৬৩টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬০৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৪০৩টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ৫৩৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৯৪৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৬৪ জন, রংপুর বিভাগে ৪৯ জন, খুলনা বিভাগে ৩৯ জন, বরিশাল বিভাগে ৩২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৭২ জন, সিলেট বিভাগে ৩১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৮ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ২৮ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ১৬১ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৬২৯ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৩৯ হাজার ১০৭ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪০ হাজার ৫২২ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২২৯ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৯৬ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯১ হাজার ২৪৫ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৮ হাজার ৩৭৯ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৮৬৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ হাজার ২৮৭ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১২ লাখ ৬২ হাজার ৯৮৬ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩ হাজার ১৪৭টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৩০টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৩৭৭টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২৯ লাখ ৬৫ হাজার ৮৫৬টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ৩ হাজার ৬০৯ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮৪ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৭ লাখ ৩৮ হাজার ৭৩৩ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৬৩ হাজার ৪৫৪ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬ কোটি ১৮ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩০ জন এবং ১৪ লাখ ৪৮ হাজার ৮৯৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।