টাইফয়েড, কলেরা, অপুষ্টি ও অন্যান্য আন্ত্রিক রোগের চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান নিয়ে তিনদিনব্যাপী এশীয় সম্মেলন (অ্যাসকড) ঢাকায় শুরু হয়েছে।আজ মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল সোনাগাঁয়ে তিনদিনব্যাপী এই এশীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে টাইফয়েড, কলেরা, অপুষ্টি এবং অন্ত্রের অন্যান্য রোগ-সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ এবং এসবের মোকাবিলার উপায় সম্পর্কে সম্মেলনে বিস্তারিত আলোচনা হবে। সম্মেলন চলবে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত।
ডায়রিয়া ও পুষ্টি বিষয়ক পঞ্চদশ এশীয় সম্মেলনে ৪৫০জন গবেষক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক, নীতি নির্ধারক এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন কর্মীরা এতে অংশগ্রহণ করছেন।পঞ্চদশ অ্যাসকড-এর আয়োজন করছে আইসিডিডিআর,বি এবং এতে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন এজেন্সি এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেইটস ফাউন্ডেশন।
সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘টাইফয়েড, কলেরা ও অন্যান্য আন্ত্রিক রোগের সাথে পুষ্টি-সংশ্লিষ্ট ব্যাধির সম্পর্ক: মানবিক বিপর্যয়ের যুগে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ।’
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা আন্ত্রিক রোগ মোকাবেলার উদ্দেশ্যে নতুন গবেষণা উপস্থাপন করবেন, বিজ্ঞানভিত্তিক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক স্থাপন করবেন এবং একটি সুস্পষ্ট আলোচ্যসূচি প্রণয়ন করবেন।
আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে, রোগের বৈশ্বিক ব্যাপকতা; অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধী হয়ে ওঠা; রোগনির্ণয় ও নজরদারি ব্যবস্থার জন্য সর্বোত্তম অনুশীলন; পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যকর ব্যবস্থা-সংক্রান্ত অভ্যাস এবং কলেরা ও নতুন টাইফয়েড কনজুগেইট টিকার উৎপাদনে অগ্রগতিসহ রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ-সংক্রান্ত কৌশল।সংবাদ সম্মেলনে আইসিডিডিআর,বি’র সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ও অ্যাসকড-এর সভাপতি ড. ফেরদৌসী কাদরী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও ভারতের ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ-এর প্রাক্তন মহাপরিচালক অধ্যাপক নির্মল কে. গাঙ্গুলি অ্যাসকড-এর পটভূমি সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন।
জাহিদ মালেক বলেন, এই সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ আলাপ-অলোচনা ২০৩০ সালের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ন্ত্রণে বৈশ্বিক লক্ষ্য এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে।
আইসিডিডিআর,বি’র নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর জন ক্লেমেন্স বলেন, ‘ঢাকায় পঞ্চদশ অ্যাসকড অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য লাখ লাখ মানুষ যেসব বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য-সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চলেছে তা সমাধানের উদ্দেশ্যে নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন, জ্ঞান বিনিময় এবং আমাদের গবেষণা, উদ্ভাবন ও কর্মকৌশলসমূহ আলোচনা ও মূল্যায়ন করা।’সুইডেনের ইউনিভার্সিটি অব গোথেবার্র্গের অধ্যাপক ইয়ান হোমগ্রেন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের পক্ষে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বাংলাদেশী বিজ্ঞানীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন। এ সময়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
১৯৮১ সালে যখন ডায়রিয়া শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং মুখে খাওয়ার স্যালাইনের কার্যকারিতা দেখা যায় তখন প্রথমবারের মতো এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং তখন থেকেই অ্যাসকড এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে, যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন।