- প্রকাশিত : ২০১৮-০৪-২৮
- ৭২২ বার পঠিত
-
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিনিধি:- মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের দুই থেকে আড়াই লাখ বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে চলে গেছে। এই তথ্য স্বয়ং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলামের। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি পরিচয়ে রোহিঙ্গাদের নানা অপকর্মে বাংলাদেশের শ্রমবাজারেরে ক্ষতির আলোচনার মধ্যেই তথ্যটি জানালেন মন্ত্রী। আর এজন্য তিনি দায়ী করলেন পাসপোর্ট প্রদানে সরকারি সংস্থার নজরদারির অভাবকে।
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘এসো গড়ি মাতৃভূমি’ শীর্ষক ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স সিরিজ ২০১৮ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন মন্ত্রী। এর আয়োজন করে সেন্টার ফর নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশিস (এনআরবি)।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে গেলে অনেকে বাংলাদেশি পরিচয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। কোথায় বাড়ি জিজ্ঞেস করলে জানা যায়, তারা রোহিঙ্গা। তাদের সংখ্যা দুই থেকে আড়াই লাখ হতে পারে।’
মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না। আর ৮০ দশকের শুরুর দিক থেকে নানা সময় সেনা অভিযানের মুখে বাংলাদেশে ছুটে এসেছে লাখ লাখ রোহিঙ্গা। কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরে তাদের থাকার জায়গা হয়েছে। তবে সবচেয়ে বড় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে রাখাইন রাজ্যে গত আগস্টের সেনা অভিযানের পর থেকে। এখন অবধি ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বহু বছর ধরেই আশ্রয় শিবির ছেড়ে রোহিঙ্গাদের দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার তথ্য পাওয়া গেছে। নানাভাবে তারা ভোটার তালিকায় নামও তুলেছে বলে তথ্য আছে। আর ভোটার তালিকায় এখন নাম থাকলে তার ছবিসহ জাতীয় পরিচয়পত্রও থাকবে। তবে কী পরিমাণ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন, সেই তথ্যটি অজানা।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী বলছেন, ‘মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে সিন্ডিকেট হয়েছে। তবে এটা আমাদের দেশের নয়, ওই দেশেরই সিন্ডিকেট। এখন শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করে দিলে কেউ যেতে পারবে না, সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
প্রবাসী শ্রমিকরা বৈধ পথে বাংলাদেশে অর্থ পাঠালে তাদেরকে প্রণোদনা দেয়ার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী রাজি থাকলে এটি চালু করা হবে। এতে বৈধ পথে আয় আরও বাড়বে।’
অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের আয় দেশে আনতে ভূমিকা রাখায় ১০টি ব্যাংককে পুরস্কারও দেন মন্ত্রী। এগুলো হলো, ইসলামী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া ও দি সিটি ব্যাংক। ব্যাংক এশিয়া, প্রাইম ব্যাংক, এবি ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও টিসিবিএল গ্রুপের হাতে ‘ব্র্যান্ডি আওয়ার্ড’ নামে আরও একটি পুরস্কার তুলে দেন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী। এই পুরস্কারও দেয়া হয়েছে প্রবাসী আয় দেশে আনতে অবদান রাখায়।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করারও আহ্বান জানান মন্ত্রী। বলেন, এজন্যও সরকার বিশেষ সুবিধা দেবে।
সেন্টার ফর এনআরবি চেয়ারম্যান এমএস শাকিল চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সাবেক মন্ত্রী এসকে শহিদুল ইসলাম, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, নির্বাচন কমিশন সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজি হাসান প্রমুখ। কয়েকজন প্রবাসীও এ সময় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
নিউজটি শেয়ার করুন
এ জাতীয় আরো খবর..