শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বিশ্বের যেখানেই মানসম্মত শিক্ষা আছে, সেখানেই পরীক্ষার চাপ কম। পরীক্ষার চাপ যত কমানো যায়, ততবেশী মানসম্মত শিক্ষা হয়। আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হল সংলগ্ন মাঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরাও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন আনছি। পুরো পড়াশোনাটাই হবে শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক। মূল্যায়ন পদ্ধতিরও পরিবর্তন আনছি। ধারাবাহিক মূল্যায়ন অনেক বেশী হবে। শিক্ষার্থীদের কাজের মধ্য দিয়ে মূল্যায়ন হবে, অভিজ্ঞতা ভিত্তিক মূল্যায়ন হবে। সেটিই আমরা চাই। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের নিজেদের স্বশিখনের উপর জোর দেয়া হবে। তাদের নিজের মতো করে শেখার উপরেও জোর দেয়া হবে। তারা যা শিখবে তা যেন বাস্তজীবনে প্রয়োগ করতে পারে।
‘আপনারা জানেন যে, প্রাক প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রম আমরা প্রণয়ন করেছি’-এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই শিক্ষাক্রম অনুযায়ী নতুন বছর থেকে পরীক্ষণমূলক পাইলটিং হবে, পরিমার্জন ও পর্যালোচনা করে ২০২৩ সালে তা বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, ২০২৩ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত আমাদের এই প্রাক প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত নতুন কার্যক্রম কাজ করতে শুরু করবে। অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমরা এ পথে হাঁটছি। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “আপনারা বলেছেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের কথা। এসডিজি-৪ যেটি, সেটি অর্ন্তভূক্তিমূলক শিক্ষার কথা বলে। সেখানে ইনক্লুসিভ এন্ড ইকুইটেবল এডুকেশন, কোয়ালিটিটিভ শিক্ষা, লাইফলার্ন শিক্ষা- সেখানে শিক্ষার গুণগতমান অর্জনের কথা বলছে, অর্থ্যাৎ কোয়ালিটি এডুকেশন ও জীবনব্যাপী শিক্ষা। কারণ পৃথিবী এতো দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে, কাজেই আজকে আমরা যা শিখছি তা দু-চার, পাঁচ বছরের মধ্যে সেই শিক্ষাটা কখনো কখনো হয়তো একবারেই আর কাজে লাগানো যাচ্ছে না। সেই বিষয়টাই পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। তাহলে আমাদের নতুন প্রযুক্তি ও নতুন দক্ষতা শিখতে হবে। অর্জন করতে হবে অভিজ্ঞতা। শিখতে হবে জীবনব্যাপী।”
মন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমটি একবারেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নির্ভর করা হয়েছে। এতে জ্ঞান ও প্রযুক্তির উপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কারিগরী শিক্ষার উপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। দক্ষ ও যোগ্য মানবসম্পদ তৈরির উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, যারা হবে অভিযোজনে দক্ষ ও সক্ষম। যে কোন পরিবর্তনই আসুক না কেন, তারা যেন তাতে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে। এটিই হচ্ছে আমাদের রূপকল্প।