মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক বলেছেন, টেকনোলজি সেন্টার স্থাপনের সিদ্ধান্ত খুবই সময়োপযোগী পদক্ষেপ এবং এই সেন্টারের মাধ্যমে পণ্যের গুণগত মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করা হবে। ফলে তৈরি পোশাক পণ্যের মত নতুন নতুন সম্ভাবনাময় রপ্তানি পণ্য আমরা পাবো।
মঙ্গলবার গাজীপুরের কালিয়াকৈর বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক্সপোর্ট কম্পেটিটিভনেস ফর জবস (ইসিফরজে) প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়নাধীন সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, ইসিফরজে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. মনছুরুল আলম, গাজীপুর সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর জেলা প্রশাসক এস. এম. তরিকুল ইসলাম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
মোজাম্মেল হক বলেন, টেকনোলজি সেন্টার দেশের রপ্তানি আয় বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখবে। ব্যবসায়ীরা এই সেন্টার ব্যবহার করে এর সুফল গ্রহণ করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন,বর্তমান বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতা করতে গেলে পণ্যের ডিজাইন ও গুণগত মান আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে। না হলে রপ্তানিতে আমরা প্রতিযোগিতা করতে পারবো না।
তিনি বলেন, অনেক দেশ কম রপ্তানি করেও উৎপাদিত পণ্যে ভ্যালু এডিশন বেশি থাকায় অধিক বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। আর আমরা বেশি রপ্তানি করেও পণ্যের ডিজাইন ও গুণগতমানের অভাবের কারণে যথাযথ ভ্যালু এডিশন করতে না পারায় আয় কম করছি। তাই পণ্যের ডিজাইন,চিন্তায়, উৎকর্ষতায় ও গুণগত মানোন্নয়ন করতে হবে।
টিপু মুনশি আশা প্রকাশ করেন, পণ্যের মান্নোয়নে উদ্যোক্তারা টেকনোলজি সেন্টার ব্যবহার করবেন। টেকনোলজি সেন্টার ব্যবহার করে রপ্তানির ক্ষেত্রে যেসব বাঁধা আছে, সেগুলো দূর করতে পারবেন তারা।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, পণ্যের মান্নোয়নের ক্ষেত্রে যেসব ঘাটতি রয়েছে, সেগুলো দূর করার লক্ষ্যে টেকনোলজি সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। আশা করি এই সেন্টার থেকে বিশ্বমানের পণ্য তৈরি করে বিশ্ববাজারে প্রবেশ করবে উদ্যোক্তারা।
প্রসঙ্গত, উচ্চ প্রবৃদ্ধি, টেকসই উন্নয়ন ও শোভন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে রপ্তানি বহুমুখীকরণ সরকারের লক্ষ্য। এরই অংশ হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ইসিফরজে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো অত্যাধুনিক টেকনোলজি ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও পণ্যের গুণগত মানোন্নয়ন করা। এ লক্ষ্যে প্রকল্পের আওতায় ৪টি অত্যাধুনিক টেকনোলজি সেন্টার চট্টগ্রাম, গাজিপুর ও মুন্সিগঞ্জে প্রতিষ্ঠা করা হবে। বিশ্বমানের এ সকল টেকনোলজি সেন্টারে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত চারটি খাত যথা-চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাদুকা, প্লাস্টিক এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের শিল্পসমূহের জন্য টেকসই প্রযুক্তিগত সেবা প্রদান করা হবে।
সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি-কেন্দ্রটি ৪টি সেন্টারের মধ্যে ১টি। এ সেন্টারটি গাজীপুরের কালিয়াকৈর বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে ৫ দশমিক ২ একর একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। এ সেন্টারের মাধ্যমে বিশেষ করে হালকা প্রকৌশল ও প্লাস্টিকখাতসহ সংশ্লিষ্ট ম্যানুফেকচারিং খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পসমূহের জন্য আধুনিক প্রযুক্তিগত ও লাগসই টেকনোলজি সেবা,যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ, কারিগরি ও ব্যবসায়িক পরামর্শ সেবা প্রদানের মাধ্যমে দেশীয় শিল্পসমূহের উৎকর্ষতা বৃদ্ধি করা হবে।