চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা কমেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৪৬৬ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। আক্রান্তের হার ১৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এদিনে সুস্থতার সংখ্যাও তুলনামূলক বেশি, ৪০৯ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে দেখা যায়, গতকাল শুক্রবার এন্টিজেন টেস্ট ও নয় ল্যাবে চট্টগ্রামের ২ হাজার ৩৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ৪৬৬ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৯৭ জন এবং তেরো উপজেলার ১৬৯ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ রাউজানে ৫০ জন, হাটহাজারীতে ৪১ জন, ফটিকছড়িতে ২৩ জন, বোয়ালখালীতে ২২ জন, আনোয়ারায় ১১ জন, সীতাকু-ে ৮ জন, চন্দনাইশে ৬ জন, মিরসরাই ও পটিয়ায় ২ জন করে এবং সন্দ্বীপ, লোহাগাড়া, বাঁশখালী ও সাতকানিয়ায় ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় মোট সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৯৪ হাজার ৩৫০ জনে। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৬৯ হাজার ৩৮৮ জন ও গ্রামের ২৫ হাজার ১২ জন।
গতকাল চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত শহরের ৩ ও গ্রামের ২ বাসিন্দা মারা যান। ফলে মৃতের সংখ্যা এখন ১ হাজার ১১৬ জন হয়েছে। এতে শহরের ৬৪৬ জন ও গ্রামের ৪৭০ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র নিয়েছেন ৫৯৩ জন। মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৬০ হাজার ৯৩৪ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৮ হাজার ৭৬৬ জন এবং হোম আইসোলেশেনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৫২ হাজার ১৬৮ জন। হোম আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৩৭৯ জন ও কোয়ারেন্টাইন ছাড়পত্র নেন ৪০৯ জন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ৪ হাজার ৪২২ জন।
উল্লেখ্য, গত কিছুদিনের তুলনায় গতকাল জেলায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিতের সংখ্যা, হার ও মৃত্যু কমেছে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে। এখানে ৯৩২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৬৩ ও গ্রামের ৩৫ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ৩০২ জনের নমুনায় শহরের ৬৩ ও গ্রামের ৩৫ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ২৪৫ টি নমুনায় শহরের ৩৫ ও গ্রামের ৩৫ টিতে করোনার জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ২১২ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ৪১ ও গ্রামের ৪৪ জন আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হন। মাত্র ৩৪ জনের এন্টিজেন টেস্টে গ্রামের ৪ জন পজিটিভ বলে জানানো হয়।
নগরীর বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ২৪৬ টি নমুনা পরীক্ষা করে গ্রামের ৫ টিসহ ৩৫ টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৫৭ নমুনার মধ্যে গ্রামের ৪ টিসহ ৩১ টি, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ৬২ নমুনায় গ্রামের একটিসহ ১০ টি, মেডিকেল সেন্টারে ২৯ টি নমুনা পরীক্ষায় শহরের ১১ টি এবং এপিক হেলথ কেয়ার হাসপাতালে ১১৫ নমুনায় শহরের ৩৬ ও গ্রামের ৯ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে।
এদিন চট্টগ্রামের কোনো নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়নি এবং জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতেও (আরটিআরএল) নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ৮ দশমিক ২৬ শতাংশ, চমেকে ৩২ দশমিক ৪৫, সিভাসু’তে ২৮ দশমিক ৫৭, চবি’তে ৪০ দশমিক ০৯, এন্টিজেন টেস্টে ১১ দশমিক ৭৬, শেভরনে ১২ দশমিক ৬০, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৯ দশমিক ৭৪, মা ও শিশু হাসপাতালে ১৬ দশমিক ৩৯, মেডিকেল সেন্টারে দশমিক ৩৭ দশমিক ৯৩ এবং এপিক হেলথ কেয়ারে ৩৯ দশমিক ১৩ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।