টটেনহ্যামকে ৩-০ গোলে পরাজিত প্রিমিয়ার লিগ টেবিলে আরো এগিয়ে গেছে শীর্ষে থাকা ম্যানচেস্টার সিটি। এই জয়ে তারা দ্বিতীয় স্থানে থাকা লিস্টারের তুলনায় সাত পয়েন্ট ও নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে আট পয়েন্টের ব্যবধানে পিছনে ফেলেছে। এদিকে এগিয়ে থেকেও সাত মিনিটের ঝড়ে লিস্টার সিটির কাছে ৩-১ গোলে পরাজয় বরণ করতে বাধ্য হয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল।
ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে ইন-ফর্ম ইকে গুনডোগান করেছেন দুই গোল। যদিও কুঁচকির ইনজুরিতে পড়ে দ্বিতীয়ার্ধে তাকে মাঠ ছাড়তে হয়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১১ দিন পর বরুসিয়া মোচেনগ্ল্যাডবাখের বিপক্ষে শেষ ১৬’র প্রথম লেগের লড়াইকে সামনে রেখে গুনডোগানের ইনজুরি নিয়ে দু:শ্চিন্তায় পড়েছেন কোচ পেপ গার্দিওলা। দীর্ঘদিন পর ইউরোপীয়া লড়াইয়ে ফিরে আসার সিটিকে নিয়ে গার্দিওলা ইতোমধ্যেই ভিন্ন কৌশল সাজানো শুরু করেছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বেশীরভাগ ম্যাচই যেহেতু নক আউট ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়, সে কারনে পেনাল্টি শ্যুট আউটে সিটির সাম্প্রতিক ব্যর্থতা নিয়ে আলাদাভাবে চিন্তা করছেন গার্দিওলা। গুনডোগান ও রাহিম স্টার্লিং সম্প্রতি পেনাল্টি মিস করার পর এর দায়িত্ব পেয়েছেন প্রায় এক বছর কোন গোল না পাওয়া রডরিগো। কাল তার পেনাল্টিতেই সিটি এগিয়ে গিয়েছিল। গার্দিওলা বলেছেন, ‘আমি তার সাহসকে সম্মান করি। যদিও তার শটটি ততটা শক্তিশালী ছিল না, এই গোলটিতে আমাদের ভাগ্য সহায় ছিল।’
এই জয়ে সিটি ইংলিশ শীর্ষ লিগের কোন দল হিসেবে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় সিটি তাদের জয়ের ধারা ১৬ ম্যাচ পর্যন্ত নিয়ে গেছে। দ্বিতীয় স্থানে তাকা লিস্টারের তুলনায় গার্দিওলার দল অবশ্য এক ম্যাচ কম খেলেছে।
সিটির তুলনায় স্পার্সদের কাল মাঠে বেশ পরিশ্রান্ত দেখা গেছে। এনিয়ে শেষ ছয় ম্যাচে তারা পাঁচটিতেই পরাজিত হলেও শীর্ষ চারের অবস্থান থেকে এখনো চার পয়েন্টই পিছিয়ে রয়েছে। ২৩ ম্যাচ আগে শেষ দল হিসেবে সিটিকে পরাজিত করেছিল টটেনহ্যাম। নাটকীয় ঐ জয়ের পর থেকেই স্পার্স ও সিটি দলের ভাগ্য পরিবর্তিত হতে শুরু করেছে। ঐ জয়ের পর হোসে মরিনহোর দল টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছিল। কিন্তু এরপর ১৪ লিগ ম্যাচে মাত্র চারটিতে জয়ী হয়ে স্পার্সরা বর্তমান টেবিলের অষ্টম স্থানে রয়েছে।
হ্যার কেনের দুর্দান্ত ফি-কিক পোস্টে লেগে ফেরত আসায় শুরুতেই ব্যর্থ হয় সফরকারী টটেনহ্যাম। মরিনহো স্বীকার করেছেন তার দল খুবই পরিশ্রান্ত ছিল। শেষ ১১ ম্যাচে মাত্র দুই গোল হজম করা সিটির বিপক্ষে কাজটা যে মোটেই সহজ হবে না সেটা স্পার্সরা শুরু থেকেই টের পাচ্ছিল। ডি বক্সের ভিতর পিয়েরে-এমিলে হোবার্গ গুনডোগানকে ফাউল করলে রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। হুগো লোরিসকে পরাস্ত করে ২৩ মিনিটে সিটিকে এগিয়ে দেন রডরিগো। সিটির দ্বিতীয় গোলে লোরিসের ভুল ছিল চোখে পড়ার মত। ৫০ মিনিটে গুনডোগানের বাম পায়েল দূর্বল শট ধরতে গিয়ে পড়ে যান লোরিস। এতেই ব্যবধান দ্বিগুন হয় সিটির। ৬৬ মিনিটে এডারসনের লম্বা পাস থেকে মধ্যমাঠে বল পেয়ে গুনডোগান দলের জয় নিশ্চিত করেন। ১২ লিগ ম্যাচে এটি গুনডোগানের ১১তম গোল। শেষ ২৫ মিনিটে মরিনহো ডেলে আলি ও গ্যারেথ বেলকে মাঠে নামিয়েও সাফল্য পাননি।
এদিকে দিনের শুরুতে লিস্টারের কাছে হোঁচট খেয়েছে লিভারপুল। আর আবারো রেডদের পরাজয়ে গোলরক্ষক এ্যালিসন বেকারের ভুল সামনে চলে এসেছে। ৩-১ গোলের এই পরাজয়ে শীর্ষ চারে টিকে থাকাই এখন কষ্টকর হয়ে পড়ছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। এনিয়ে টানা তৃতীয় ম্যাচে পরাজিত হরো জার্গেন ক্লপের দল। কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধ গোলশুন্য থাকার পর মোহাম্মদ সালাহ ৬৭ মিনিটে সফরকারীদের এগিয়ে দেন। কিন্তু স্বাগতিকরা সাত মিনিটে তিন গোল কওে লিভারপুলকে হতবাক করে দিয়ে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। ৭৮ মিনিটে জেমস ম্যাডিসনের গোলে সমতা ফেরায় লিস্টার। ভিএআর প্রযুক্তি গোলটি নিশ্চিত করে। ৮১ মিনিটে জেমি ভার্দির শট ক্লিয়ার এ্যালিসন ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে এগিয়ে যায় লিস্টার। গত সপ্তাহে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ৪-১ গোলে পরাজয়ের ম্যাচটিতে দুটি মারাত্মক ভুল করেছিলেন এ্যালিসন। ৮৫ মিনিটে হার্ভি বার্নেসের গোলে লিস্টারের দাপুটে জয় নিশ্চিত হয়। এই পরাজয়ে লিভারপুল শীর্ষে থাকা সিটির তুলনায় ১০ পয়েন্ট পিছিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে নেমে গেছে।