বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সিলেটে যুক্তরাজ্য থেকে ফেরতদের জন্য সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কোয়ারান্টাইন বাধ্যতামুলক করা হয়েছ। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ২ টি আবাসিক হোটেলকে প্রস্তুত করা হয়েছে ,আরও ৬ টি হোটেল প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া চলছে।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যুক্তরাজ্যের সাথে বিমান যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিলেও বাংলাদেশের সাথে এখনও যোগাযোগ অব্যাহত থাকায় বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত সিলেটি প্রবাসীরা অনেকেই দেশে ফেরা শুরু করেছেন,তাই করোনার ভয়াবহতা এড়াতে বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাজ্য ফেরতদের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের ঘোষণা দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে সিলেটে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য দু’টি উন্নতমানের হোটেল ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়াও মোট ৬ টি হোটেল চূড়ান্ত করে প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া চলছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসন এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান এসব হোটেলে যুক্তরাজ্য হতে সিলট ফেরত যাত্রীদেরকে নিজ খরচে ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।আর কোয়ারেণ্টাইনে থাকা এসকল ফেরত যাত্রীদের সার্বিক সহযোগিতা করবে জেলা প্রশাসন।
সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ জানান, যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে প্রতি সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট সিলেট আসে। প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার ওসমানী বিমানবন্দরে আসে বিমানের এসব ফ্লাইট। গত ১ জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে যারা লন্ডন থেকে আসবেন তারা সরকার নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে বাধ্যতামূলক নিজ খরছে ১৪দিন থাকতে হবে। ১৫ জানুয়ারির পরবর্তী সিদ্ধান্ত এখনও তাদের কাছে পৌঁছেনি। তিনি জানান নির্ধারিত এসময়ের এখনো যুক্তরাজ্য থেকে সিলেটে কোন ফ্লাইট আসেনি, তবে ৪ জানুয়ারি সোমবার লন্ডন থেকে সিলেট সরাসরি বিমানের ফ্লাইট আসার কথা রয়েছে, এ ফ্লাইটকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে যাত্রীদের কোয়ারান্টাইনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সিভিল এভিয়েশন সূত্র জানায় যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার দুটি ফ্লাইট সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে আসে।সিলেটে গত একমাসে যুক্তরাজ্য থেকে প্রায় দেড় হাজার যাত্রী এসেছেন। এতে করে সিলেটে করোনার নতুন করে ছড়িয়ে পড়ার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় যুক্তরাজ্য থেকে আসা যাত্রীদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম জানান, যুক্তরাজ্য ফেরতদের অবশ্যই সরকার ঘোষিত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন মানতে হবে। এ লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যে সিলেটের হোটেল স্টার স্পেসিফিক ও হোটেল হলি গেইট চূড়ান্ত করেছি। এছাড়াও আরও ৬টি হোটেল চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। যাতে এক সঙ্গে ৭শ’ মানুষকে কোয়ারেন্টিনে রাখা যায় সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যারা যুক্তরাজ্য থেকে সিলেটে আসবেন তাঁরা এসব হোটেলে নিজ খরচে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য ফেরতদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার বিষয়ে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন বিআরডিটিআই ক্যাম্প এবং যাত্রীদের আর্থিক অবস্থা অনুযায়ী বিভিন্ন হোটেলে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। যারা কোয়ারেন্টাইনের খরচ দিতে পারবেন না তারা সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকা সিলেটের শাহপরাণ এলাকার বিআরডিটিআই ক্যাম্পে থাকার ব্যাবস্হা রাখা হয়েছে।