দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৮৭তম দিন পর্যন্ত এই ভাইরাসে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়িয়েছে। পাশাপাশি করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৩৭ হাজারের বেশি মানুষ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে এ পর্যন্ত মোট ৩০ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫ লাখ ৭১৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট পরীক্ষার ২৪ লাখ ৫০ হাজার ৫০৯টি হয়েছে সরকারি এবং ৬ লাখ ২৫ হাজার ১৭১টি হয়েছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ২৮ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৩১ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ হাজার ৩১৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ১৫৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১২ হাজার ৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ২৬৭ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ কম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯২৬ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৭ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ। গতকাল সুস্থতার হার ছিল ৮৭ দশমিক ২০ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৩৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ১৩ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছে। গতকাল ২৫ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭ হাজার ২৮০ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৯০০ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৫ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৮৯৫টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের সরকারি ৯৬ ও বেসরকারি ৬৪টিসহ ১৬০টি পরীক্ষাগারে (এন্টিজেন টেস্টসহ) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৩১৬ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২ হাজার ৩০০ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ১৬টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৯৪০ দশমিক ০৭ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২৫৬৯ দশমিক ০৬ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৪২ দশমিক ৭৫ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩৮ জনের মধ্যে পুরুষ ৩০ জন, আর নারী ৮ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৫৫২ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৭২৮ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ২৬ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩৮ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের বছরের ৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৯ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২২ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৪ জন; যা দশমিক ৪৭ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৫ জন; যা দশমিক ৭৬ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৫৮ জন; যা ২ দশমিক ১৭ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৬৮ জন; যা ৫ দশমিক ০৫ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৮৫৬ জন; যা ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৮৬১ জন; যা ২৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৯৪৮ জন; যা ৫৪ দশমিক ২৩ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ২২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ২ জন, সিলেট বিভাহে ৩ জন এবং বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৯৮১ জন; যা ৫৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৩৫১ জন; যা ১৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৪২৮ জন; যা ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৫১৬ জন; যা ৭ দশমিক ০৯ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২৩২ জন; যা ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৮৬ জন; যা ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ৩২৭ জন; যা ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫৯ জন; যা ২ দশমিক ১৮ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ২৮৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮১১ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৪৭৩টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ২৮৬টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২১২ জন ও শয্যা খালি আছে ৭৪টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬৮৭টি, ভর্তিকৃত রোগী ২৯১ জন ও শয্যা খালি আছে ৩৯৬টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৪৫টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৯ জন ও শয্যা খালি আছে ২৬টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৪৮৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৬২ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৯২৭টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২৩৭টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৭১ জন ও শয্যা খালি আছে ১৬৬টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১০ হাজার ৪৬০টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৬৬৪ জন এবং শয্যা খালি আছে ৭ হাজার ৭৯৬টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৮টি, রোগী ভর্তি আছে ৩০২ জন এবং খালি আছে ২৬৬টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ১৯২টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬৬৭টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৬১৪টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৯২৬ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৪৩৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৯২ জন, রংপুর বিভাগে ২৫ জন, খুলনা বিভাগে ৬০ জন, বরিশাল বিভাগে ২১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫১ জন, সিলেট বিভাগে ৩৭ জন এবং ময়মনসিংহে ৭ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫৫০ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৫২ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৯৭ হাজার ১৭৩ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৭২৭ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৯ হাজার ৪৪৬ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১২৯ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৫৬ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯৪ হাজার ৯৪০ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৮২ হাজার ৬১২ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৩২৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৬ হাজার ২৫৮ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১৩ লাখ ৭৭ হাজার ২৪৬ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ২ হাজার ৩৯১টি, ৩৩৩ এই হটলাইন নম্বরে ৪ হাজার ৩৯৬টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৩৯টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৯২৬টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৩২ লাখ ৩ হাজার ১০৪টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ৩ হাজার ৮৯৭ জন, এবং এ পর্যন্ত ৬ লাখ ৩৬ হাজার ৭২০ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১৫ লাখ ৭২ হাজার ২৪৭ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৭৭ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭ কোটি ৪২ লাখ ৯৯ হাজার ৪২ জন এবং ১৬ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।