দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৬৯তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা কমেছে, পাশাপাশি সুস্থতার হার বেড়েছে।গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৪ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ৬৭৫ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত ১৪ নভেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ হাজার ৫০১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ২৯৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ২৩২ জন কম শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৫ হাজার ৩৭২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৫২৫ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৭ লাখ ৮৮ হাজার ২০২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৬৭ হাজার ২২৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫১৩ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৮৩ হাজার ২২৪ জন। আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮২ দশমিক ০২ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১৩ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৯৬৯ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৫ হাজার ৫৬৫ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৪০৪টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৮টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৫০১ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ৩৭২ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১২৯টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৭৪৩ দশমিক ৪৪ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২২৫০ দশমিক ২০ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৯ দশমিক ১৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩১ জনের মধ্যে পুরুষ ১৭ জন, আর নারী ১৪ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ১১৬ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৫৫৯ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩১ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের ২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৭ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১৯ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩২ জন; যা দশমিক ৪৮ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৪ জন; যা দশমিক ৮১ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৪৯ জন; যা ২ দশমিক ২৩ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৪৪ জন; যা ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৮০৩ জন; যা ১২ দশমিক ০৩ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৭৪৩ জন; যা ২৬ দশমিক ১১ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৫৫০ জন; যা ৫৩ দশমিক ১৮ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ২৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জন এবং রাজশাহী, সিলেট ও ময়মনসিংহে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৫৮৮ জন; যা ৫৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২৬২ জন; যা ১৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৪০৭ জন; যা ৬ দশমিক ১০ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৯৮ জন; যা ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২১৯ জন; যা ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৬৬ জন; যা ৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ৩০১ জন; যা ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩৪ জন; যা ২ দশমিক ০১ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৪০৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ২০৯ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ১৯৫টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৬টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২২৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৯০টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৭০টি, ভর্তিকৃত রোগী ২৩৯ জন ও শয্যা খালি আছে ৫৩১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৯ জন ও শয্যা খালি আছে ২০টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ১৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৫৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৬০৮টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১৯টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩৬টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৩৩৮টি, রোগী ভর্তি আছে ৩ হাজার ৪ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৩৩৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৭৪টি, রোগী ভর্তি আছে ৩২৯ জন এবং খালি আছে ২৪৬টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৬৮টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬১৩টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৪০৩টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ৫১৩ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৮৪২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪১৯ জন, রংপুর বিভাগে ৫০ জন, খুলনা বিভাগে ৪৬ জন, বরিশাল বিভাগে ২৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ৮৪ জন, সিলেট বিভাগে ৩৩ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১১ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ১৬২ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯০১ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৮০ হাজার ৭৯১ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৪০ হাজার ৮ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪০ হাজার ৭৮৩ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২৬১ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৯৮ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯১ হাজার ৫০৬ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৮ হাজার ৫৭৭ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৯২৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ হাজার ২৭৭ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১২ লাখ ৬৮ হাজার ২৬৩ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৪৩৮টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ৩৯ হাজার ২০১টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৭৭টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৮১৬টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৩০ লাখ ৮ হাজার ৬৭২টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ৩ হাজার ৬৮২ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৮২ হাজার ২৬৬ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৭০৪ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৬৪ হাজার ১৪৪ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬ কোটি ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৫২৭ জন এবং ১৪ লাখ ৫৬ হাজার ৬৮৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।