দেশে গত ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ১৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন এবং ১ হাজার ৫৭৭ জন সুস্থ হয়েছেন।
গতকালের চেয়ে আজ ৫ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছিলেন ১৩ জন। এখন পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ৬৭ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গতকালও মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫৭৭ জন। গতকালের চেয়ে আজ ৩৬ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৫৪১ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮০ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ১২ হাজার ৭৬০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৪৭৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১৮৫ জন বেশি শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১১ হাজার ৪১৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলে ১ হাজার ২৮৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১১ দশমিক ২৯ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৪ লাখ ৪২ হাজার ৬০২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ২০ হাজার ২৩৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ২০ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৬০১ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১১ হাজার ২৮৪ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৩১৭টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৪টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৭৬০ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১১ হাজার ৪১৯ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৩৪১টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৪৬৭ দশমিক ৫৪ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৯৮৫ দশমিক ৫১ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৫ দশমিক ৬২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ১৮ জনের মধ্যে পুরুষ ১৪ জন, আর নারী ৪ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৬৭১ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৩৯৬ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ০১ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ১৭ জন হাসপাতালে এবং ১ জন বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের বছরের ১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৫ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১১ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯ জন; যা দশমিক ৪৮ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৭ জন; যা দশমিক ৭৭ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৪০ জন; যা ২ দশমিক ৩১ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩০ জন; যা ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৫৩ জন; যা ১২ দশমিক ৪১ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৫৯৭ জন; যা ২৬ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ১৭১ জন; যা ৫২ দশমিক ২৭ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ জন, খুলনা ও রংপুর বিভাগে ১ জন করে এবং বরিশাল ও সিলেট বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ১৭০ জন; যা ৫২ দশমিক ২৫ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ১৯৭ জন; যা ১৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৭৩ জন; যা ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৭৬ জন; যা ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২০২ জন; যা ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৫৩ জন; যা ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৭০ জন; যা ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১২৬ জন; যা ২ দশমিক ০৮ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৬৯ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৬৫০টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৯৪ জন ও শয্যা খালি আছে ১২০টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৮২৫টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৫১ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৭৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১১ জন ও শয্যা খালি আছে ২৮টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ২৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫২৩ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৭৪১টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৬৬ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪৫টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬০৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৫৪৩ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ৬৫টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৭১ জন এবং খালি আছে ২৯৩টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৫টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৭৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৬৩টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৫৭৭ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ১৩২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৩৪ জন, রংপুর বিভাগে ৬৫ জন, খুলনা বিভাগে ২২ জন, বরিশাল বিভাগে ২৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৫ জন এবং সিলেট বিভাগে ৭৫ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯৯ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১১৮ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৭ হাজার ৩১৭ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৫ হাজার ১৭৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ১৪২ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৭৭৬ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৯১ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৬০ হাজার ৫১৯ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ২০ হাজার ৬০৩ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৯ হাজার ৯১৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৬৫৯ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১১ লাখ ৫০ হাজার ৬৩৭ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৩১টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ফোন এসেছে ৩৩ হাজার ৬৯১টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২০৬টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩৯ হাজার ৯২৮টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২৪ লাখ ৭১ হাজার ৩৫১টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ২ হাজার ২৯৩ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ২৮ হাজার ৭৩১ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৭ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৫ লাখ ৮৬ হাজার ৪০৯ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬১৫ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৭ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৯১ লাখ ৬ হাজার ৯৩১ জন এবং ১২ লাখ ৩৯ হাজার ১৫৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।