শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাল্টিমোড সার্ভিল্যান্স সিস্টেম (রাডার) স্থাপন নিজস্ব অর্থায়নে
অর্থনৈতিক ডেস্ক:-
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাল্টিমোড সার্ভিল্যান্স সিস্টেম (রাডার) স্থাপন প্রকল্পটি পিপিপির (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) পরিবর্তে নিজস্ব অর্থায়নে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতকাল সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এদিকে ২৫৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে টাঙ্গাইল, পঞ্চগড়, বাগেরহাট, নীলফামারী ও লালমনিরহাটে চারটি প্রকল্পে সম্মতি দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। ১১ টাকার বেশি দরে সরকার এসব প্রকল্পের বিদ্যুৎ কিনবে। আর এ চারটি প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা।গতকাল সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে কমিটির সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। চারটি প্রকল্পেই বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২০ বছর মেয়াদি চুক্তি করবে সরকার। বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর নির্ধারিত দামে সেই বিদ্যুৎ সরকার ক্রয় করবে বলে প্রস্তাবে বলা হয়েছে।বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অস্বাভাবিক ব্যয় ও নিরাপত্তার কারণে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বৈঠক শেষে এমন তথ্য জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।তিনি জানান, যখন এটি পিপিপিতে দেয়া হয়েছিল, তখন ব্যয় কম হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। এখন টেন্ডার করার পর দেখা যাচ্ছে, ব্যয় বেশি হবে। তাই এটি সরকারি অর্থায়নে হবে।হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আধুনিক ও যুগোপযোগী রাডার স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিন থাকলেও অর্থাভাবে তা হয়নি। ড্যানিশ অর্থায়নে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আপগ্রেডেশন প্রকল্পে রাডার সংস্থাপন কম্পোনেন্টটি থাকলেও অর্থাভাবে সেটিও বাদ পড়ে। পরবর্তীতে জরুরি ভিত্তিতে পিপিপির মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সুপারিশ করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। পরে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ৩৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছিল।বিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পর্কে জানানো হয়, ৫০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র হবে টাঙ্গাইলে। এটি বাস্তবায়ন করবে কনসোর্টিয়াম অব হানওয়া ৬৩ সিটি কোম্পানি লিমিটেড, বিজে পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এবং সোলার সিটি বাংলাদেশ লিমিটেড।এই বিদ্যুৎ প্রতি কিলোওয়াট ১৩ মার্কিন সেন্ট দরে ক্রয় করবে সরকার, যা বাংলাদেশি টাকায় পড়বে ১০ টাকা ৪০ পয়সা। ২০ বছরে সরকারের আনুমানিক মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা।পঞ্চগড়ের কেন্দ্রে উৎপাদন হবে ৮ মেগাওয়াট। এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশের জেভি অব প্যারাগন পোল্ট্রি লিমিটেড ও প্যারাসোল এনার্জি লিমিটেড এবং হংকংয়ের সিম্বোইর সোলার সিয়াম লিমিটেড। একই দরে বিদ্যুৎ ক্রয়ে ২০ বছরে সরকারের মোট আনুমানিক ব্যয় হবে ২৬৮ কোটি টাকা।বাগেরহাটের ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্র তৈরি করবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের এনারগন টেকনোলজিজ এফজেডই এবং চায়না সানারজি কোম্পানি লিমিটেড। প্রতি কিলোওয়াট ১৩ দশমিক ৮ সেন্ট দরে ক্রয় করবে সরকার, যা বাংলাদেশি টাকায় পড়বে ১১ টাকা ৪ পয়সা। ২০ বছরে আনুমানিক ৩৫৭৮ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে।নীলফামারী ও লালমনিরহাটের অপর বিদ্যুৎকেন্দ্র দু’টিও ১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন। বাস্তবায়ন করবে কনসোর্টিয়াম অব ঝেজিয়াং ডান্যান নিউ এনার্জি কোম্পানি লিমিটেড, চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন, সোলার টেক পাওয়ার লিমিটেড, এমিটি সোলার লিমিটেড। প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ ১৪ মার্কিন সেন্ট বা ১১ টাকা ২০ পয়সা করে ক্রয় করবে সরকার। ২০ বছরে সরকারের মোট ব্যয় হবে ৩৬২৮ কোটি টাকা।