কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ৩৫তম মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক মেশিনারী মেলায় অংশগ্রহণ করছে।
মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এন্ড এক্সিবিশন সেন্টারে ১১-১৩ জুলাই পর্যন্ত আয়োজিত মেলায় বাংলাদেশসহ ১০ টি দেশের ৭৮০ টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দেশসমূহ হলো চীন, জার্মানী, কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান, ইরান, জাপান, ভারত, হংকং এবং সিংগাপুর। ই এস ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এ মেলা আয়োজন করেছে।
১১ জুলাই মেলা উদ্বোধন করেন মালয়েশিয়া এক্সটারনাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন এর উপ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বকর ইউসুফ।
আজ মেলার দ্বিতীয় দিন শুক্রবার (১২ জুলাই) মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো: শামীম আহসান মেলায় বাংলাদেশের স্টল পরিদর্শন করেন।
এ সময় তিনি বাংলাদেশ হাইকমিশনের স্টলে আগত ব্যবসায়ী ও দর্শনার্থীদের সাথে মত বিনিময় করেন এবং বাংলাদেশে সম্ভাবনাময় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে তাদেরকে অবহিত করেন। পরিদর্শনের সময় আয়োজক প্রতিষ্ঠান ই এস ইভেন্ট ম্যনেজমেন্ট এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও মালয়েশিয়া-চায়না ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড লিংক এসোসিয়েশন এর প্রেসিডেন্ট দাতো চং চং তিক, মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এন্ড এক্সিবিশন সেন্টারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মালা ডোরাস্যামি ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রবাসী গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
হাইকমিশনার উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী পণ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে প্রথমবারের মতো এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ মেলায় অংশগ্রণের মাধ্যমে পণ্যের নতুন বাজার সৃষ্টির সুযোগ তৈরী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণের অংশ হিসেবে তৈরী পোষাকের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য বেশি করে রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুসৃত ‘অর্থনৈতিক কূটনীতি’ অনুসরনের ধারাবাহিকতায় কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ হাইকমিশন এর স্টলে প্লাস্টিক পণ্য, তৈরী পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, পাটপণ্য, খাদ্যপণ্য এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকাশনা প্রদর্শিত হচ্ছে। এছাড়াও, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প, প্যাকেজিং শিল্প, বাংলাদেশে ব্যবসা-বিনিয়োগ সংক্রান্ত নানা ধরনের প্রকাশনা, পর্যটন ও বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা বিষয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে।
ঢাকাস্থ এলিয়েন্ট লিমিটেডের সহযোগিতায় আমান প্লাস্টিক, এক্সক্লুসিভ ক্যান লিমিটেড, কিউ পেইল, এসিআই প্রিমিও প্লাস্টিক, প্রিমিয়াফ্লেক্স প্লাস্টিক লিমিটেড, আরএফএল কোম্পানীসমূহের প্লাসিকপণ্য, নওগাঁ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, মাফিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, রাজা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ, ফেয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, মেশিন ঘর ওয়ার্কস, বায়োনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, সুইস বায়োহাইজেনিক ইকুইপমেন্টস এর তথ্যবহুল প্রকাশনা, ড্যানিশ, তীর ও প্রাণ কোম্পানীর খাদ্যসামগ্রী এবং কাউ এপারেলস, জাবের অ্যান্ড জুবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেড, স্কয়ার, এনজেড টেক্স, আরবিডি ফাইবারস লিমিটেড এর তৈরী পোশাক সামগ্রী সংগ্রহপূর্বক বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট শিল্পসমূহ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য বাংলাদেশ হাইকমিশন এর স্টলে আগত দর্শনার্থীদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে।
মেলা উদ্বোধনের দিন থেকেই বাংলাদেশী স্টলসমূহে বিদেশী ব্যবসায়ীসহ দর্শনার্থীদের ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাংলাদেশী পণ্য বিশেষত প্লাস্টিক পণ্য, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প, তৈরী পোশাক ও পাটজাত পণ্য সম্পর্কে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মালয়েশিয়া বাংলাদেশে বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ।