মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ায় জয়েন্ট পেইনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রুত রোগ নির্ণয় করে যথাযথ সময়ে জয়েন্ট পেইনের চিকিৎসা করাতে হবে। নইলে এর কারণে আক্রান্ত ব্যক্তি কর্মক্ষমতা পর্যন্ত হারাতে পারে।
আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-ব্লক মিলনায়তনে ‘জয়েন্ট পেইন ’ নিয়ে মাসিক সেন্ট্রাল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহাবিলিটেশন বিভাগের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, শিশু বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিশু রিমাউটোলজি ডিভিশনের হেড এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অধ্যাপক ডা. মানিক কুমার তালুকদার এবং রিউমাটোলোজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) সৈয়দ জামিল আব্দাল ‘জয়েন্ট পেইন’ বিষয়ক তিনটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সেমিনারে বলা হয়, প্রতি তিন জনে এক জন যেকোন বাত জনিত রোগ বা আথ্রাইটিস রোগে ভোগেন। অস্থিসন্ধি বা হাড়ের গিড়ায় ব্যাথা, গায়ে ব্যাথা, মাংসে ব্যাথা ইত্যাদি আথ্রাইটিসের প্রধান লক্ষণ হলেও এই রোগ শরীরের প্রায় সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। শতকরা ৫.৫ জন বাত জনিত রোগের কারণে কর্মক্ষমতা হারান। পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশী বাত জনিত রোগে ভোগেন। শহরের চেয়ে গ্রামের লোকজন বেশী বাতজনিত রোগে ভোগে। দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা নিলে কার্যক্ষমতা হারানো থেকে মুক্ত হওয়া যায়। দেশের প্রতিটি সরকারি হাসাপাতালে রিউমাটোলোজি বিভাগ খোলা উচিত। বাংলাদেশে বাতজনিত রোগের চিকিৎসক বা রিউমাটোলোজিস্টদের সংখ্যা খুবই কম। দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয় ছাড়া অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে রিউমাটোলোজিতে এমডি কোর্স করার সুযোগ নেই। তাই সরকারি বড় বড় হাসপাতালে এ কোর্স চালু করা প্রয়োজন। তবে আশার কথা হলো, বর্তমানে কিছু কিছু সরকারি হাসপাতালে বর্হিবিভাগে রিউমাটোলোজি বিভাগের সেবা দেয়া হচ্ছে। প্রযোজনীয় রিউমাটোলোজিস্ট তৈরির লক্ষ্যে বিএসএএমইউ কাজ করছে।
সেমিনারে আরো জানানো হয়, শতকরা ১০-২০ ভাগ শিশু বিভিন্ন ধরণের মাংসপেশী, হাড় ও অস্থিসন্ধির রোগে আক্রান্ত। শিশুদের এই সমস্যাগুলো বর্তমানে ক্রমবর্ধমান। এ রোগ হলে রোগীদের ব্যবস্থাপনায় বয়স, লিঙ্গ, রোগভোগ কাল, ব্যথার ধরণ, গিড়া জমে যাওয়া, অন্যান্য প্রয়োজনীয় ইতিহাস জানা প্রয়োজন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সেন্ট্রাল সাব কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিএসএমএমইউয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খানসহ অনেকে।