যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন, মারধর ও বাসা থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগে জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার আল-আমিন হোসেনের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেছে পুলিশ।
নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১১ এর গ ধারায় প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ চার্জশিট দাখিল করা হয়।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাল্লাহের আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক সোহেল রানা। আজ আল আমিন হাজিরা প্রদান করেন। এরপর মামলাটির পরবর্তী বিচারের জন্য ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ বদলির আদেশ দেন।
এরআগে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর ক্রিকেটার আল-আমিনের স্ত্রী ইসরাত জাহানের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ২ সেপ্টেম্বর মামলা আকারে নথিভুক্ত করে মিরপুর মডেল থানা।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে ক্রিকেটার আল-আমিন হোসেনের সঙ্গে ইসরাত জাহানের বিয়ে হয়। এ দম্পতির দু’সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে এ পর্যন্ত আল-আমিন তার স্ত্রী ইসরাতের কাছে ফ্ল্যাটের মূল্য পরিশোধের জন্য ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন।
ইসরাতের বাবা যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে, আল-আমিন তাকে মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেন। বেশ কয়েকবার মারধর করার পর তিনি (ইসরাত) আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নেন। কিন্তু দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পারিবারিকভাবে আপস-মীমাংসা করে নেন। এতে আল-আমিন শান্ত না হয়ে দিনের পর দিন তার ওপর অত্যাচারসহ শারীরিক নির্যাতন অব্যাহত রাখে।
মামলার অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ২৫ আগস্ট আল-আমিন তার স্ত্রীর কাছে যৌতুকের দাবি করা টাকা নিয়ে বাগবিতন্ডায় জড়ান। তার স্ত্রী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন। আল-আমিন তার (ইসরাত) সঙ্গে সংসার করবেন না, তাকে তালাক দেবেন এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেন। পরে ইসরাতের চাচা তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরলে আল-আমিন তার সঙ্গে আগের মতো আচরণ করতে থাকেন।
মামলায় ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদন করেন আল-আমিন। পরদিন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তার আট সপ্তাহের আগাম জামিন মঞ্জুর করেন। আট সপ্তাহ পর তাকে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করতে বলেন আদালত।
গত ১ নভেম্বর হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন।