ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে সুপ্রিমকোর্টে প্রবেশের বিভিন্ন পথসহ আদালত প্রাঙ্গণে কাল রোববার থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও প্রবেশ কড়াকড়ি করা হচ্ছে।
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির জানান, কাল ২৯ মে রোববার থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে আইনজীবী ও আদালত সংশ্লিষ্ট সকলকে পরিচয়পত্র বহন ও আদালতে প্রবেশে গাড়ীর ষ্টীকার নিশ্চিতে বলা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর দোয়েল চত্বরসহ আশপাশের এলাকায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়ে। সুপ্রিমকোর্ট বার প্রাঙ্গণে সেদিন রক্তাক্তের ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার হন তিনজন আইনজীবীও। এর পাশাপাশি আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকারের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় আইনজীবীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ঘটনার পরপরই সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন নিরাপত্তায় নিয়োজিত সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে বসে। নিরাপত্তা বিষয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের নিয়ে আলোচনায় বসেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। সভাশেষে বিভিন্ন নির্দেশনা দেন প্রধান বিচারপতি।
আজ সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. বজলুর রহমানের নেতৃত্বে প্রশাসনের কর্মকর্তা ও নিরাপত্তায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা আদালত প্রাঙ্গণের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রব্বানী, আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, রাজধানীর শাহবাগ থানার ওসিসহ অন্যান্যরাও উপস্থিত ছিলেন। সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকিরের সঙ্গেও কথা বলেন।
কাল থেকে সুপ্রিমকোর্টে প্রবেশের মূল ফটক সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে বন্ধ থাকবে। তবে মাজার গেট সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে। সুপ্রিমকোর্টের জাজেস স্পোর্টস কমপ্লেক্সসংলগ্ন মসজিদ গেট সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত থোলা থাকবে। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলসংলগ্ন গেট দিয়ে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে শুধু গাড়ি বের হতে পারবে। তবে এ গেট দিয়ে কোনো গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না। এ ছাড়া বাংলা একাডেমির বিপরীত পাশে অবস্থিত গেটটি সার্বক্ষণিক বন্ধ থাকবে।
আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে প্রধান বিচারপতি কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের অংশ হিসেবে আগামীকাল রোববার থেকে সুপ্রিমকোর্টে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। তবে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা যাতে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া নির্বিঘেœ আদালতে প্রবেশ করতে পারেন তা নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, বিনা প্রয়োজনে কেউ যাতে আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে না পারেন, তাও নিশ্চিত করা হবে। নির্ধারিত পার্কিং স্থান ছাড়া আদালত প্রাঙ্গণে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করা যাবে না। যত্রযত্র গাড়ি পার্কিং করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে।