শিক্ষাবিদ, লেখক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টা মামলায় হামলাকারী ফয়জুল হাসানকে যাবজ্জীবন ও তার বন্ধু মো. সোহাগ মিয়াকে চার বছরের কারাদ- দিয়েছেন আদালত।
মামলার অন্য চার আসামি ফয়জুল হাসানের বাবা মাওলানা আতিকুর রহমান, মা মিনারা বেগম, মামা ফজলুল হক ও ভাই এনামুল হাসানকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব এ রায় ঘোষণা করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মমিনুর রহমান টিটু।
এর আগে গত ২২ মার্চ উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। পরে, সিলেট বিভাগীয় সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন।
গত ১০ মার্চ চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। মামলায় মোট ৫৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এরপর ২১ ও ২২ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। মামলায় ৫ জন আসামি জামিনে থাকলেও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। বর্তমানে ছয় আসামির সবাই কারাগারে রয়েছেন।
২০১৮ সালের ৩ মার্চ বিকেলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠান চলার সময় ড. জাফর ইকবালের উপর হামলা হয়। ফয়জুল হাসান নামের এক যুবক ছুরি দিয়ে জাফর ইকবালের মাথা ও ঘাড়ে উপুর্যপরি আঘাত করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্র-শিক্ষকরা হামলাকারীকে হাতেহাতে ধরে আইনশৃংখলারক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেন। পরে জাফর ইকবালকে আহত অবস্থায় প্রথমে নগরীর এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় শাবি রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। ২০১৮ সালের ১৬ জুলাই ফয়জুলসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, ফয়জুলের বন্ধু সোহাগ মিয়া, বাবা মাওলানা আতিকুর রহমান, মা মিনারা বেগম, মামা ফজলুল হক ও ভাই এনামুল হাসান। এই বছরের ৪ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়।