বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের নেতৃত্বে রয়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির (ঢাকা বার) সাবেক সভাপতি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর অন্যতম সদস্য এডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান।
এডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমানের নেতৃত্বে প্যানেলের প্রার্থীগণ ৬ এপ্রিল মনোয়নপ্রত্র দাখিল করেন। সৈয়দ রেজাউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। তিনি এ পর্যন্ত বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে নয় বার নির্বাচিত হয়েছেন। দেশের ইতিহাসে ‘ভয়াবহ নৃশংস বর্বরোচিত জঘন্যতম ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা’ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌসুঁলি ছিলেন তিনি।
দেশের আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচন আগামী ২৫ মে বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন স্বাক্ষরিত নির্বাচন সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়েছে, ২৫ মে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন, দেশের সব দেওয়ানি আদালত প্রাঙ্গণসহ বাজিতপুর, ইশ্বরগঞ্জ, দুর্গাপুর, ভাংগা, চিকন্দি, পটিয়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, ফটিকছড়ি, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, নবীনগর ও পাইকগাছা দেওয়ানি আদালতসমূহে একটি করে ভোটকেন্দ্র থাকবে।
বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের প্রার্থীরা হলেন, সাধারণ আসনে এডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, সাবেক মন্ত্রী এডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম, ঢাকা বার-এর সাবেক সভাপতি এডভোকেট মোখলেছুর রহমান বাদল, এডভোকেট শাহ মো. খসরুজ্জামান, এডভোকেট শাহ মো. জিকরুল আহমেদ, এডভোকেট মো. রবিউল আলম (বুদু), এডভোকেট মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ (রাজা)। অঞ্চলভিত্তিক গ্রুপ আসনে-ঢাকা অঞ্চলের জন্য এডভোকেট আবদুল বাতেন, ময়মনসিংহ টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর অঞ্চলের জন্য এডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন খান, চট্রগ্রাম ও নোয়াখালীর জন্য এডভোকেট মোহাম্মদ মুজিবুল হক, কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলের জন্য এডভোকেট এ এফ এম রুহুল এনাম চৌধুরী (মিন্টু), খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালীর জন্য এডভোকেট আনিস উদ্দিন আহমেদ শহীদ, রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়ার জন্য এডভোকেট মো. ইকরামুল হক এবং দিনাজপুর, বগুড়া, রংপুর ও পাবনার জন্য এডভোকেট মো. আবদুর রহমান।
অপরদিকে, বার কাউন্সিল নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য সমর্থিত প্রার্থীদের নামও প্রকাশ করা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীগণ হলেন,সাধারণ আসনে সাবেক এটর্নি জেনারেল এডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী, সিনিয়র এডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন, এডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুল মতিন। অঞ্চল ভিত্তিক গ্রুপ আসনে-ঢাকা অঞ্চলের জন্য এডভোকেট মোহাম্মদ মহসিন মিয়া, ময়মনসিংহ টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর অঞ্চলের জন্য-এডভোকেট আব্দুল বাকী মিয়া, চট্টগ্রাম নোয়াখালীর জন্য-এডভোকেট এএসএন বদরুল আনোয়ার, কুমিলাø ও সিলেট অঞ্চলের জন্য-এডভোকেট এটিএম ফয়েজ উদ্দিন, খুলনা বরিশাল ও পটুয়াখালীর জন্য-এডভোকেট মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন বাচ্চু, রাজশাহী যশোর কুষ্টিয়ার জন্য এডভোকেট মোহাম্মদ মাইনুল আহসান এবং দিনাজপুর বগুড়া রংপুর পাবনা এডভোকেট শফিকুল ইসলাম টুকু।
বার কাউন্সিল নির্বাচন ১৪ পদে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে সাধারণ আসন ৭টি। এখানে সারাদেশের আইনজীবীদের প্রত্যক্ষ ভোটে ৭ জন নির্বাচিত হন। দেশকে ৭ টি অঞ্চলে ভাগ করে এই ৭ গ্রুপে এলাকাভিত্তিক আইনজীবীদের ভোটে ৭ জন নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ‘এ’ গ্রুপে বৃহত্তর (পূর্ববর্তী) ঢাকা জেলার অন্তর্গত সব স্থানীয় আইনজীবী সমিতি, ‘বি’ গ্রুপে বৃহত্তর (পূর্ববর্তী) ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত সব স্থানীয় আইনজীবী সমিতি, ‘সি’গ্রুপে বৃহত্তর (পূর্ববর্তী) চট্রগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত সব স্থানীয় আইনজীবী সমিতি, ‘ডি’ গ্রুপে বৃহত্তর (পূর্ববর্তী) কুমিল্লা ও সিলেট জেলার অন্তর্গত সব স্থানীয় আইনজীবী সমিতি, ‘ই’ গ্রুপে বৃহত্তর (পূর্ববর্তী) খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার অন্তর্গত সব স্থানীয় আইনজীবী সমিতি, ‘এফ’ গ্রুপে বৃহত্তর (পূর্ববর্তী) রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার অন্তর্গত সব স্থানীয় আইনজীবী সমিতি এবং ‘জি’ গ্রুপে বৃহত্তর (পূর্ববর্তী) দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার অন্তর্গত সব স্থানীয় আইনজীবী সমিতি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
গেজেট অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন ছিল ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। সে অনুযায়ী প্রার্থীগণ মনোয়নপত্র দাখিল করেছেন। তফসিল অনুযায়ি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১৩ এপ্রিল এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ এপ্রিল ।
করোনা মহামারি জনিত পরিস্থিতির কারণে বার কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে না পারায় বর্তমানে একটি এ্যাডহক কমিটি দায়িত্ব পালন করছে। এই কমিটি ৩০ জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। আগামী ১ জুলাই নির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
১৯৭২ সালের বাংলাদেশ লিগ্যাল প্র্যাকটিশনারস অ্যান্ড বার কাউন্সিল অর্ডার অনুসারে, ১৫ জন সদস্যকে নিয়ে বার কাউন্সিল গঠিত হয়। এর মধ্যে কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হন পদাধিকারবলে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা এটর্নি জেনারেল। বাকি ১৪ জন সদস্য সারা দেশের আইনজীবীদের ভোটে নির্বাচিত হন। নির্বাচিত ১৪ সদস্য ভোটাভুটির মাধ্যমে একজনকে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন।
সর্বশেষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ সংখ্যাগরিষ্টতা লাভ করে। সিনিয়র এডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।