ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ও মুশফিকুর রহিমের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে গ্রুপ-১এ নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭১ রান করেছে বাংলাদেশ। নাইম ৬২ ও মুশফিক অপরাজিত ৫৭ রান করেন।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ম্যাচে এবার আর টস জিততে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বাছাই পর্বের তিন ম্যাচেই টস জিতেছিলেন তিনি। টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় শ্রীলংকা। বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচের একাদশ থেকে একটি পরিবর্তন এনে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলতে নামে টাইগাররা। ডান-হাতি পেসার তাসকিন আহমেদের পরিবর্তে সেরা একাদশে সুযোগ পান বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ।
প্রথমে ব্যাট করার সুবিধাটা ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ও লিটন দাস। তবে সাবধানী শুরু ছিলো তাদের। প্রথম ওভারে না পারলেও দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম পর্যন্ত প্রতিটি ওভারেই একটি করে বাউন্ডারি হাকান নাইম-লিটন।
দুই ওপেনারের দৃঢ়তায় ৫ ওভার শেষে ৩৮ রান পেয়ে যায় বাংলাদেশ। ষষ্ঠ ওভারে এই জুটি ভাঙ্গেন শ্রীলংকার পেসার লাহিরু কুমারা। উইকেট থেকে সামান্য সড়ে মিড-অফ দিয়ে বাউন্ডারি আদায়ের চেস্টা করেন লিটন। কিন্তু শটটা যুৎসই না হওয়াতে সেটি তালুবন্দি করেন শ্রীলংকার অধিনায়ক দাসুন শানাকা। ল্টিন ব্যক্তিগত ১৬ বলে ১৬ এবং দলীয় ৪০ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর ক্রিজে নাইমের সঙ্গী হন সাকিব আল হাসান। সপ্তম ওভারে বাংলাদেশের স্কোরে ১৪ রান জমা করেন তারা। সাকিব দু’টি ও নাইম একটি বাউন্ডারি মারেন। দ্রুত রান তুলে উইকেটে সেট হবার পথে ছিলেন সাকিব। তবে সেটি আর সম্ভব হয়নি। অষ্টম ওভারে উইকেট থেকে সড়ে লেগ সাইড দিয়ে ফ্লিক শট খেলতে টাইমিং মিস করেন সাকিব। শ্রীলংকার পেসার চামিকা করুনারতেœর ডেলিভারি উইকেট ভেঙ্গে দিলে ৭ বলে ১০ রান করে আউট হন সাকিব।
ভালো শুরুর পরও ১৪ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট পতনে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। দলকে চাপ থেকে মুক্ত করতে সাবধানে এগোতে থাকেন নাইম ও চার নম্বরে নামা মুশফিক। পরের ১৭ বলে কোন বাউন্ডারি বা ওভার বাউন্ডারি পায়নি বাংলাদেশ।
১১তম ওভারের চতুর্থ বলে শ্রীলংকার স্পিনার হাসারাঙ্গা ডি সিলভাকে স্লগ সুইপে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন মুশফিক। এখানেই নিজেকে গুটিয়ে রাখেননি মুশি। ১৩তম ওভারের প্রথম বলে শ্রীলংকার বাঁ-হাতি পেসার বিনুরা ফার্নান্দোকে স্কয়ার লেগ দিয়ে আবারো ছক্কা হাকান তিনি।
মুশফিকের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রানের গতি ধরে রাখার চেষ্টায় ছিলেন নাইম। ১৪তম ওভারের চতুর্থ বলে বাউন্ডারি দিয়ে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন তিনি। ৪৪ বলে এবারের আসরের দ্বিতীয় ও ২৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে চতুর্থ অর্ধশতক করেন নাইম।
১৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান গিয়ে দাঁড়ায় ২ উইকেট ১২৯ রানে। ক্রিজে দুই সেট ব্যাটসম্যান থাকায় বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু ১৬তম ওভারের প্রথম বলে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ফার্নান্দোকে পুল শটে মারতে গিয়ে তাকেই ক্যাচ দেন নাইম। ৬টি চারে ৫২ বলে ৬২ রান করেন নাইম। বাছাই পর্বে ওমানের বিপক্ষে ৬৪ রান করেছিলেন তিনি। মুশফিকের সাথে তৃতীয় উইকেটে ৫১ বলে ৭৩ রান যোগ করেন নাইম। যেখানে নাইম ৩৪ ও মুশফিক ৩৭ রানের অবদান রাখেন।
নাইমের বিদায়ের ওভারে ১১ রান তোলেন মুশফিক ও আফিফ হোসেন। আর ১৯তম ওভারের প্রথম বলে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন মুশি। ৩২ বলে আসে তার কাঙ্খিত হাফ-সেঞ্চুরি। ১১ ইনিংস পর সংক্ষিপ্ত ভার্সনে হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। ৯৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরি মুশফিকের।
৭ রান করে আফিফ রান আউট হলে, শেষ নয় বলে ২১ রান যোগ করেন মুশফিক ও অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। এ সময় মাহমুদুল্লাহ ২টি ও মুশফিক ১টি বাউন্ডারি মারেন। ফলে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭১ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
মুশফিক ৩৭ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ৫৭ রান করেন। ২টি চারে ৫ বলে অপরাজিত ১০ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। শ্রীলংকার করুনারত্নে-ফার্নান্দো-কুমারা ১টি করে উইকেট নেন।