সিলেট নগরীর শাহ মীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শিশু আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে দেয়া তিন আসামির মৃত্যুদন্ডাদেশ বহাল রেখেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল খারিজ করে এ আদেশ দেয়।
এ মামলায় বিচারিক আদালত আসামি মাসুমকে খালাস দিয়ে বাকি তিনজনকে মৃত্যদন্ড দেয়। সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রশিদ এই রায় দেন। পরে মৃত্যুদন্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। অপরদিকে আসামিরাও আপিল করে।
ফাসিঁর দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বরখাস্তকৃত পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুল, সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাকিব ও পুলিশের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা।
এ মামলায় আদালতে এবাদুর রহমান পুতুলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাকিবের পক্ষে সাঈদ আহমেদ রাজা এবং আতাউর রহমানের পক্ষে ছিলেন মো. সিদ্দিকুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, হাইকোর্ট আজ আমাদের আপিল খারিজ করে দিয়েছে। ফলে আসামিদের মৃত্যুদন্ড বহাল থাকল।
তিনি আরও বলেন, ‘হাইকোর্টের রায় পেলে আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো।’
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১১ মার্চ সিলেট নগরীর শাহ মীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আবু সাঈদ (৯) অপহৃত হয়। এর ৩ দিনপর ১৪ মার্চ নগরীর ঝর্ণারপাড় সোনাতলা এলাকায় পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুলের বাসার ছাদের চিলেকোঠা থেকে আবু সাঈদের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
একই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর এ মামলায় ৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন কোতোয়ালি থানার তৎকালীন ওসি (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন।
চার্জশিটে এ তিনজন ছাড়াও ওলামা লীগ নেতা মাহিব হোসেন মাসুমকে আসামি করা হয়। এ মামলায় দ্রুত বিচার শেষে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর আসামি মাসুমকে খালাস দিয়ে বাকি ৩ জনকে মৃত্যদন্ড দেন সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রশিদ।
পরে মৃত্যুদন্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। অপরদিকে আসামিরাও আপিল করে।
নিহত আবু সাঈদ সিলেট নগরীর রায়নগর শাহ মীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ও রায়নগর দর্জিবন্দ বসুন্ধরা ৭৪ নম্বর বাসার আব্দুল মতিনের ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার এড়ালিয়া বাজারের খশিলা এলাকায়।