আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি বলেছেন, ফৌজদারী মামলার ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমন জারি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি সাক্ষীর মোবাইল ফোনে এসএমএস প্রদানের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ অবহিতকরণ কার্যক্রমে বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগ ও হয়রানি কমাবে।
“বিদ্যমান সমনজারি পদ্ধতির পাশাপাশি এসএমএস বার্তার মাধ্যমে সাক্ষগ্রহণের তারিখ মামলার সাক্ষীকে অবহিতকরণ কার্যক্রমের” উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আজ এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে সচিবালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাবুল্লাহ্, নরসিংদীর জেলা ও দায়রা জজ মোসতাক আহমেদ, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দীন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, বিচার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে এবং বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা কমাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে মামলার দীর্ঘসূত্রিতার অন্যতম কারণ আদালতে সময়মত সাক্ষী হাজির হতে না পারা, সাক্ষীর অনুপস্থিতি কিংবা সাক্ষীর গরহাজির। এর পিছনে অন্যতম কারণ হলো সাক্ষীর সময়মত সমন না পাওয়া। এর পিছনেও রয়েছে যথেষ্ঠ যুক্তি ও কারণ। সাক্ষীকে এসএমএস প্রেরণ কার্যক্রম উক্ত সকল কারণ ও যুক্তি খন্ডন করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
আনিসুল হক বলেন, এই সার্ভিসের মাধ্যমে মামলার সাক্ষীগণ আদালতে বিচারাধীন মামলার ধার্য তারিখ সম্পর্কে দ্রুততম সময়ে ও সহজে জানতে পারবেন এবং তারা তা একই সময়ে জানতে পারবেন। যেহেতু ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ও মোবাইলে এই মেসেজ প্রদান করা হবে তাই কেউ মেসেজ পেয়ে অস্বীকারও করতে পারবেন না। এতে করে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে স্বাক্ষীগণের মধ্যেও একটি দায়বদ্ধতা তৈরি হবে। ফলে আদালতে সময়মত সাক্ষী উপস্থাপন ত্বরান্বিত হবে। স্বল্প সময়ে ও সহজে ন্যায়বিচার প্রদান করা সম্ভব হবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, আজ পাইলট ভিত্তিতে কুমিল্লা ও নরসিংদীতে সমন জারির এসএমএস পদ্ধতি চালু করা হলো। এ পদ্ধতিতে আদালত কর্তৃক কোন মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ নির্ধারিত হলে তা ডিজিটাল সিস্টেম ব্যবহার করে সাক্ষীগণকে জানানো হবে। পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত পদ্ধতিতেও সমন পাঠানো হবে। পাইলট ভিত্তিতে গৃহীত এ কার্যক্রম পর্যালোচনা করে এবং এ থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে সারাদেশে এ কার্যক্রম বিস্তৃত করা হবে।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বলেন, এসএমএস বার্তার মাধ্যমে সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ মামলার সাক্ষীকে অবহিতকরণের বিষয়টি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ অগ্রযাত্রায় আরও একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। তিনি বলেন, কোভিড লকডাউনকালে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা এবং এসএমএস এর মাধ্যমে গৃহীত কার্যক্রমের মাধ্যমে বিচার বিভাগের যে যাত্রা শুরু হলো তার সূদুর প্রসারি প্রভাব কাজে লাগবে। তিনি বলেন, একটি ছোট্ট এসএমএস এর মাধ্যমে অনেক জটিলতার সমাধান হবে। মন্ত্রী বলেন, এবছরের মধ্যে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে ডিজিটাল সংযোগ পৌঁছে দিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বদ্ধপরিকর। ইতোমধ্যে দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকায় ডিজিটাল সংযোগ পৌঁছে দেয়া হয়েছে। হাওর, দ্বীপ, চর সহ দুর্গম অঞ্চলে এ সংযোগ পৌছানোর কাজ শুরু হয়েছে।