×
ব্রেকিং নিউজ :
সবুজ রূপান্তর ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় সহায়তার প্রতিশ্রুতি সুইডেনের সিটি কর্পোরেশন-জেলা উপজেলা ও পৌরসভায় বসানো হচ্ছে ‘ফুল টাইম’ প্রশাসক : স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা দেশের ৮ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দিয়েছে সরকার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাঙ্গনে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ শিক্ষা উপদেষ্টার ৬ষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের তারিখ পুনঃনির্ধারণের প্রচেষ্টা চলছে : মহাসচিব ন্যাশনাল মেরিটাইম পোর্ট স্ট্যাটেজি প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার : নৌপরিবহন উপদেষ্টা পুলিশের সাবেক ডিসি জসিম উদ্দিন গ্রেফতার, হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে প্রধান উপদেষ্টাকে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণ ট্রাম্প সমর্থকদের ‘আবর্জনা’ বলায় সমালোচনার মুখোমুখি বাইডেন সুপার টাইফুন কং-রে-র সাথে লড়ছে তাইওয়ান
  • প্রকাশিত : ২০১৮-০৫-০৫
  • ৬৯৬ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিনিধি:- রক্তপাত থেকে বেরিয়ে আলোচনার মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোকে নিজেদের মধ্যেকার বিরোধ-সংঘাত দ্রুত মিটিয়ে ফেলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক্ষেত্রে ইসলামী সম্মেলন সংস্থাকে (ওআইসি) বিরোধ মীমাংসার প্রক্রিয়াগুলো শক্তিশালী করার পাশাপাশি পাঁচটি প্রস্তাব দেন তিনি।
শনিবার (৫ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ওআইসি’র পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৫তম সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, এখনকার মতো মুসলিম বিশ্ব আগে কখনও এতো পরিমাণ সংঘাত, অভ্যন্তরীণ গোলযোগ, বিভাজন ও অস্থিরতার মুখোমুখি হয়নি। এতো ব্যাপকহারে বাস্তুহারা জনগোষ্ঠীর দেশান্তর লক্ষ্য করা যায়নি। তিনি বলেন, আজ মুসলমান পরিচয়কে ভুলভাবে সহিংসতা ও চরমপন্থার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে। এই অবস্থা চলতে পারে না। চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আনার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন সময় এসেছে আমাদের চিন্তা-চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনার। সময় এসেছে টেকসই শান্তি, সংহতি ও সমৃদ্ধির আলোকে আমাদের ভবিষৎকে নতুন আঙ্গিকে ঢেলে সাজানোর। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, আজ ইসলামী বিশ্বে যেসব মতপার্থক্য ও ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পরিলক্ষিত হচ্ছে, তা খোলা মন নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দূর করা সম্ভব। রক্তপাত শুধু অপ্রয়োজনীয়ই নয়, বরং তা আরও খারাপ পরিস্থিতির জন্ম দেয়। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ইসলামী বিশ্বের রূপকল্প এমন হতে হবে যাতে আমরা আমাদের সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে পারি। আমরা নিজেরাই সব দ্বন্দ্ব-সংঘাতের সমাধান করতে পারি। দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের পথ আমাদের নিজেদেরই খুঁজে বের করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন ফলাফলকেন্দ্রিক নতুন কৌশল-সম্বলিত একটি রূপান্তরিত ওআইসি। মুসলিম বিশ্বের বিশাল জনগোষ্ঠী ও সম্পদের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর এক পঞ্চমাংশ জনশক্তি, এক তৃতীয়াংশের বেশি কৌশলগত সম্পদ এবং প্রচুর সম্ভাবনাময় কয়েকটি উদীয়মান শক্তিশালী অর্থনীতির দেশসহ অপার সম্ভাবনা ও সম্পদশালী মুসলিম বিশ্বের পিছিয়ে পড়ার কোনো কারণ নেই। তিনি বলেন, উন্নয়ন আমাদের অধিকার। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আমাদের নাগালের মধ্যে এবং সামাজিক অগ্রগতির উপায় আমাদের হাতে। আমাদের এখন প্রয়োজন যৌথ ইসলামী কর্ম কৌশল ঢেলে সাজানো। দ্বন্ধ-সংঘাত মিটিয়ে মুসলিম বিশ্বকে সামনে এগিয়ে যেতে পাঁচটি প্রস্তাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন আমরা আমাদের শক্তি ও সাহস একীভূত করার অঙ্গীকার করি এবং আমাদের মূল্যবোধ, সম্পদ ও সভ্যতাকে সুরক্ষা দেই। আসুন, আমরা সমঝোতা ও শান্তির বার্তা বিশ্বময় ছড়িয়ে দেই। এ প্রসঙ্গে আমি আমার কিছু চিন্তা-ভাবনা তুলে ধরছি: এক: ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের উপর সবাইকে আস্থাশীল হতে হবে। আমাদের সাম্প্রদায়িক মানসিকতা বর্জন করতে হবে এবং ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করা বা সমাজে বিভাজন সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ধর্মকে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। দুই: শান্তিপূর্ণ উপায়ে সব বিবাদের সমাধান করতে হবে। আমাদের নিন্দুকদের কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ বা প্রভাব বিস্তারের সুযোগ না দিয়ে নিজেদের সমস্যা নিজেদেরই সমাধান করতে হবে। ওআইসিতে আমাদের বিরোধ মীমাংসার প্রক্রিয়াগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। আমাদের নিজস্ব শক্তি ও সম্পদের আরও উৎকর্ষ সাধন করতে হবে। তিন: আমাদের আত্মসচেতন আলোকিত জীবনযাপন করতে হবে। আমাদের মৌলিক বিশ্বাসকে অটুট রেখে, আধুনিক সমাজের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে জীবনযাপন করতে হবে। তাহলেই ইসলাম-সম্পর্কিত ভীতি দূর হবে। আমাদের মুল্যবোধভিত্তিক আন্তর্জাতিক সম্পর্কের লালন করে আলোকিত বিশ্ব ব্যবস্থার পথ দেখাতে হবে। চার: দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূরীকরণ এবং জরুরি মানবিক দুরাবস্থা মোকাবিলার জন্য ইসলামী সম্মেলন সংস্থার বলিষ্ঠ কর্মসূচিসহ একটি দ্রুত কার্যকর উন্নয়নমূলক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা আবশ্যক। ওআইসি-২০২৫ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আমাদের যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সর্বশেষ: ইসলামের শাশ্বত মূল্যবোধ যেমন শান্তি, সংযম, ভ্রাতৃত্ব, সমতা, ন্যায়বিচার ও সমবেদনা থেকে আমাদের সর্বদা অনুপ্রেরণা ও শক্তি আহরণ করতে হবে। সন্ত্রাস দমনে ২০১৭ সালে রিয়াদ সম্মেলনে দেওয়া চার দফা প্রস্তাব আবারও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমত: আমাদের সন্ত্রাসীদের অস্ত্র সরবরাহের পথ বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত: সন্ত্রাসীদের অর্থ সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। তৃতীয়ত: ইসলামী উম্মার ভেতরে বিভেদ বন্ধ করতে হবে এবং চতুর্থত: নতুনভাবে সব পক্ষের জন্য সুবিধাজনক হয় এমন ব্যবস্থা রেখে আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পথে যেকোন বিরোধ নিষ্পত্তি করতে হবে। ওআইসি মহাসচিব ড. ইউসুফ এ ওথাইমিন ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। বক্তব্য দেন ওআইসি’র পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৫তম সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat