- প্রকাশিত : ২০১৮-০৪-১১
- ৭৭০ বার পঠিত
-
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিনিধি:-হাজার খানেক শিক্ষার্থীর এই আন্দোলনে সকাল থেকেই আছেন শাহরিয়ার আলম। তবে অন্যদের চেয়ে তিনি একটু আলাদা। কারণ, শাহরিয়ার আলমের বাঁ হাত নেই। ২১ বছর বয়সী এই তরুণ পৃথিবীতে এসেছেন হাতটি ছাড়াই। তবু জীবনযুদ্ধে পিছিয়ে নেই। স্বপ্ন দেখছেন চলার পথে এগিয়ে যাওয়ার। এখন পড়ছেন ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। অষ্টম সেমিস্টারের এই শিক্ষার্থী কদিন পরেই হয়ে যাবেন পুরোদস্তুর প্রকৌশলী। প্রতিবন্ধী হওয়ায় কোটাসুবিধা পাওয়ার কথা শাহরিয়ার আলমের। তবে কোটার এই সুযোগ নিতে একেবারেই চান না তিনি।
কারণ জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে নিজের কোটা রয়েছে। তবু বিন্দুমাত্র এটি নিতে চাই না। আমি চাই, কোটা সংস্কার করা হোক। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যথেষ্ট সম্মান দেখিয়ে বলছি, ৫৬ শতাংশ কোটা বৈষম্যের।’
কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতো ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথ অবরোধ করেছেন। রাজধানীর সোবহানবাগ মসজিদের বিপরীতে মিরপুর রোড অবরোধ করে তাঁরা অবস্থান নেন। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর একটি বক্তব্যের বিপরীতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বারবার স্লোগান দিচ্ছেন, ‘চাইলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’। আবার পিচঢালা এই সড়কে ইট দিয়ে লিখেছেন আরও নানা ধরনের স্লোগান।
সকাল সোয়া ১০টার দিকে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা রাপা প্লাজার মোড়ে অবস্থান নেন। গতকালের চেয়ে আজ তুলনামূলক বেশি শিক্ষার্থী সেখানে জড়ো হয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা ইট দিয়ে সড়কে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান লিখেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে তাঁরা সড়ক প্রদক্ষিণ করছেন। এ কারণে লালমাটিয়ায় আড়ং মোড়ে পুলিশ ব্যারিকেড বসিয়ে যানবাহনগুলোকে ঘুরিয়ে দিচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টার পরে আন্দোলন শুরু করেছেন। পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা যেন বাড়ি ফিরে যেতে পারে, সে জন্য নীলক্ষেত থেকে মিরপুরের গাবতলী পর্যন্ত সড়কের পশ্চিম পাশ খুলে রাখা হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ৯ এপ্রিল রাতে সংসদে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা সুযোগ পাবে না, রাজাকারের বাচ্চারা সুযোগ পাবে? তাদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংকুচিত হবে?’ তিনি বলেন, ‘রাজধানীকেন্দ্রিক একটি এলিট শ্রেণি তৈরির চক্রান্ত চলছে। তারই মহড়া গতকাল (রোববার) আমরা দেখলাম।’
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পরিষ্কার বলতে চাই। মুক্তিযুদ্ধ চলছে, চলবে। রাজাকারের বাচ্চাদের আমরা দেখে নেব। তবে ছাত্রদের প্রতি আমাদের কোনো রাগ নেই। মতলববাজ, জামায়াত-শিবির, তাদের এজেন্টদের বিরুদ্ধে সামান্য শৈথিল্য দেখানো হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলব এদের ক্ষমা নেই, ক্ষমা করা যাবে না। হয় তারা থাকবে, নতুবা আমরা থাকব।’
নিউজটি শেয়ার করুন
এ জাতীয় আরো খবর..