স্বাস্হ্য ডেস্ক:-আমরা অনেকেই মনে করি রোজা রাখার কারণে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। কেননা, রোজা রাখলে সারাদিন কোনো খাবার বা পানীয় পেটে পড়ে না। কিন্তু আমাদের এমন ধারণা ঠিক নয়, এমনটাই বলছে চিকিৎসাবিজ্ঞান। রোজা রাখার ফলে আমাদের অজান্তেই স্বাস্থ্যের বিভিন্ন ধরনের উন্নতি হয়। এমনকি অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্যও রোজা রাখা উপকারী। এমনটাই জানাচ্চে চিকিৎসাবিজ্ঞান।
চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে, রোজা একই সঙ্গে শরীরের জন্য রোগ প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। রোজা পালনের ফলে দেহে রোগবর্ধক অনেক জীবাণু ধ্বংস হয়। শরীরে ইউরিক এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে নানা প্রকার নার্ভ-সংক্রান্ত রোগ বৃদ্ধি পায়।এক মাস রোজার (রমজান মাসে) ফলে জিহ্বা ও লালাগ্রন্থি বিশ্রাম পায়। ফলে এগুলো সতেজ হয়। যারা ধূমপান করেন তাদের জিহ্বায় ক্যান্সারের মতো রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তবে এক মাস রোজার সময় ধূমপান কম করেন বলে ধূমপায়ীরা উল্লিখিত রোগগুলো হওয়ার আশঙ্কা কম। এ ছাড়া এক মাস রোজার ফলে জিহ্বায় খাদ্যদ্রব্যের স্বাদও বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে তাদের বেলায়, যারা অত্যধিক ধূমপান আর পান খেয়ে জিহ্বায় খাদ্যদ্রব্যের স্বাদ হারিয়েছেন। রোজা রাখার ফলে শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিশ্রাম পায়। দৈনিক গড়ে প্রায় ১৫ ঘণ্টা উপবাসের সময় লিভার, কিডনি ও মূত্রথলি প্রভৃতি অঙ্গ বেশ উপকারিতা লাভ করে।যাদের লিভার ও প্লিহা বড় হয়ে গেছে, রোজার তাদের ওই বর্ধিত অংশ আপনাআপনি কমে আসতে সাহায্য করে। কিডনি ও মূত্রথলির নানা প্রকার উপসর্গ রোজার ফলে নিরাময় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। রোজার ফলে অগ্ন্যাশয় (Pancreas) থেকে হজমের রস দিনের বেলায় নির্গত বন্ধ থাকে বিধায় তা-ও একমাস বিশ্রাম পায়। ফলে অগ্ন্যাশয়ের কারণে বহুমূত্র রোগ উপশম হয়।অতিভোজনের ফলে অনেকেরই পাকস্থলি বড় (Hupertrophy of the Stomach) হয়ে যায়। রোজার ফলে বড় পাকস্থলি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে এবং তার প্রকৃত অবস্থা ধারণ করে। পাকস্থলি একটি বৃহদাকার পেশিবিশেষ। শরীরের অপরাপর পেশির মতো এরও বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে। একে বিশ্রাম দেওয়ার একমাত্র পথ এর মধ্যে খাদ্য প্রবেশ না করানো, অর্থাৎ রোজা রাখা।
এক নজরে রোজা রাখার উপকারিতা-
*রোজা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে
*ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে
*ফ্যাট কমায়
*হজম ক্রিয়ার বিশ্রাম ঘটায়
*চর্মরোগ নিরাময় করে
*নেশা থেকে মুক্তি দেয়
*ভোজনবিলাস কমায়
রোজা রাখার ফলে সওয়াব হাসিলের পাশপাশি আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কমবেশি উপকার হয়। বিভিন্ন রোগব্যাধি থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি। তাই আসুন, ফরজ রোজা ছাড়াও বছরজুড়ে আমরা সবাই নফল রোজা রাখার অভ্যাসও গড়ে তুলি।