স্বাস্হ্য ডেস্ক:-
আমাদের মাথার ভেতর ছোট-বড় অনেক ধরনের রক্তবাহী নালী আছে। এগুলোর মাধ্যমে মস্তিষ্কে রক্তসঞ্চালন হয়ে থাকে। হঠাৎ করে এই রক্তপ্রবাহে কোনো বাধা পড়লে বা প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে কিংবা রক্তক্ষরণ হলে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাকে স্ট্রোক বলে। একজন সুস্থ মানুষ পথ চলতে চলতে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় পড়ে গেলেন কিংবা খেতে খেতে একদিকে অজ্ঞান হয়ে ঢলে পড়লেন, বাথরুমে গিয়ে অজ্ঞান হলেন অথবা নামাজ পড়তে পড়তে অজ্ঞান হয়ে গেলেন–এ সবই স্ট্রোকের কারণে হয়ে থাকে। স্ট্রোকে মৃত্যুর হার অনেক বেশি।
কাদের স্ট্রোক হবার সম্ভাবনা বেশি?
১. উচ্চ রক্তচাপে যারা ভোগেন
২. ডায়াবেটিস রোগীদের
৩. ধূমপায়ীদের
৪. রক্তে চর্বির পরিমাণ বেড়ে গেলে
৫. মদ্যপায়ীদের
৬. পারিবারিক স্ট্রোকের ইতিহাস থাকলে
৭. অনেকদিন ধরে জন্মনিয়ন্ত্রণের ওষুধ খেলে
৮. মস্তিষ্কে আঘাতের কারণে
৯. পলিসাইথেমিয়া ও থ্রম্বোসাইথেমিয়া রোগে ইত্যাদি।
কী কী উপসর্গ দেখা যায় সাধারণত?
১. একটা হাত বা পা অবশ হয়ে যেতে পারে। শরীরের ডান বা বাম পাশ অবশ হয়ে যায়।
২. প্রচণ্ড মাথাব্যথা।
৩. অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
৪. অস্থিরতা।
৫. বমি হওয়া।
৬. কথা বলতে না পারা বা কথা বেঁধে যাওয়া।
৭. খিঁচুনি হওয়া।
৮. ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া।
কী কী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়?
১. ব্রেইনের সিটি স্ক্যান
২. ইসিজি
৩. বুকের এক্সরে
৪. ব্লাড সুগার
৫. সেরাম ক্রিয়েটিনিন
৬. লিপিড প্রোফাইল ইত্যাদি
প্রতিরোধের উপায় :
১. ধূমপান পরিহার করা।
২. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ।
৩. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা।
৪. মদ্যপান পরিত্যাগ করা।
৫. খাদ্যে চর্বিজাতীয় খাবার কম গ্রহণ করা।
৬. শরীরের বাড়তি মেদ কমানো।
৭. নিয়মিত বয়স অনুযায়ী ব্যায়াম করা।
৮. বয়স্কদের ক্ষেত্রে কিছুদিন পরপর উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস আছে কিনা তা চেক করিয়ে নেয়া।
স্ট্রোকের রোগীর সেবা- শুশ্রূষা :
১. ২ ঘণ্টা পরপর রোগীকে ডান পাশ বা বাম পাশ করে শুইয়ে দিতে হবে।
২. সমস্ত শরীর ও বিছানা পরিষ্কার রাখতে হবে।
৩. নিয়মিত চোখ-মুখ পরিষ্কার রাখতে হবে।
৪. নাকে নল দিয়ে কৃত্রিমভাবে খাওয়াতে হবে।
৫. রোগী পুরোপুরি অজ্ঞান থাকলে কিছুক্ষণ পরপর শ্বাসনালী পরিষ্কার করতে হবে।
৬. নিয়মিত রোগীর হাত-পায়ের ব্যায়াম করাতে হবে।