তথ্য ও প্রযুক্তি ডেস্ক:-সাজিটারিয়াস এ-স্টারের ছবি তুলতে প্রস্তুত ইভেন্ট হোরাইজন টেলিস্কোপ বা ইএইচটি। এপ্রিলের ৫ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত এই ভার্চুয়াল টেলিস্কোপ আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রে থাকা ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বরটির ছবি তোলার কাজ করবে। দুই দশক ধরে এই টেলিস্কোপ নির্মাণের কাজ চলেছে। ইএনগ্যাজেটের একটি প্রতিবেদন জানাচ্ছে এ তথ্য।
ইভেন্ট হোরাইজন টেলিস্কোপ বা ইএইচটি মূলত বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা শক্তিশালী রেডিও টেলিস্কোপের সন্নিবেশ। ‘ভেরি-লং-বেসলাইন ইন্টারফেরোমেট্রি’ পদ্ধতির মাধ্যমে সারা পৃথিবীকে পরিবেষ্টন করে রাখা টেলিস্কোপগুলো একটি একক টেলিস্কোপ হিসেবে কাজ করবে। সাজিটারিয়াস এ-স্টারকে পর্যবেক্ষণ করতে খুবই শক্তিশালী টেলিস্কোপের দরকার, কারণ দূরত্বের হিসাবে পৃথিবী থেকে কৃষ্ণগহ্বরটির ফারাক অনেক বেশি। ২৬ হাজার আলোকবর্ষের কৃষ্ণবিবরের ওজন আমাদের সূর্যের চার কোটি গুণ! পৃথিবী থেকে চাঁদের মাঝে একটি আঙুরকে দেখার সঙ্গে সাজিটারিয়াসকে খুঁজে বের করার তুলনা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।ছবি তোলার এই কর্মযজ্ঞে বেশ ভালোমতো প্রস্তুতি নিচ্ছে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন অবজারভেটরি। অতি সূক্ষ্ম দিনক্ষণ গণনার জন্য ব্যবহার করা হবে পারমাণবিক ঘড়ি। একই সঙ্গে বিপুল পরিমাণ ডাটা সংগ্রহের জন্য রাখা হয়েছে প্রচুর স্টোরেজ ব্যবস্থা, যা কি না প্রায় ১০ হাজার ল্যাপটপের ধারণক্ষমতার সমান। সারা বিশ্ব থেকে এসব হার্ডড্রাইভ নিয়ে যাওয়া হবে এমআইটির হ্যাস্ট্যাক অবজারভেটরিতে। সংগৃহীত এইসব ডাটা দীর্ঘ পর্যালোচনা করে সেখান থেকে পূর্ণাঙ্গ ফল পাওয়া যাবে।গবেষকরা জানাচ্ছেন, ২০১৮ সালের শুরুর আগে মনুষ্যজাতির তোলা প্রথম কৃষ্ণগহ্বরের ছবি পাওয়া যাবে না। কেমন হবে কৃষ্ণগহ্বরের ছবি, তার একটি নমুনা তৈরি করেছে কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমে।আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটি থেকে ধারণা করা যায়, কালো একটি বিন্দুর পাশে অর্ধচন্দ্রাকার আলোর ছটা হিসেবেই দেখা যাবে ব্ল্যাকহোলকে। মূলত কোনো কৃষ্ণগহ্বরকে সরাসরি দেখা বা ছবি তোলা অসম্ভব। তবে তার ঘটনা দিগন্ত বা ইভেন্ট হোরাইজনের পাশে থাকা আলোকরশ্মির ছবি তোলা সম্ভব। এই আলোকরশ্মির মাধ্যমেই কৃষ্ণগহ্বরের অবস্থান নিশ্চিত করা যায়।