- প্রকাশিত : ২০১৮-০৪-৩০
- ৮১৯ বার পঠিত
-
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিনিধি:- কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করছে বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের। দলটির সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখা চিকিৎসা বিদদেরকে ‘দলীয় চিকিৎসক’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এদের কথায় ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই।
ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি যেসব চিকিৎসককে সামনে নিয়ে এসে বক্তব্য দেয়াচ্ছে, তাদের কথা বিশ্বাস না করার মতো যথেষ্ঠ কারণ আছে।
সোমবার রাজধানীতে মেট্রোরেলের বিষয়ে দুটি চুক্তি সই অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী কাদের এসব কথা বলেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হওয়া খালেদা জিয়াকে প্রথমে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর দাবি করেছিল বিএনপি। তবে এ নিয়ে রাজনৈতিক গুঞ্জন শুরু হওয়ার পর সে অবস্থান থেকে ফিরে এসে বেসরকারি হাসপাতাল ইউনাইটেডে ভর্তির দাবি করছে তারা।
শনিবার বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে মুক্ত থাকা অবস্থায় খালেদা জিয়ার তিন জন চিকিৎসকের মধ্যে নিউরো মেডিসিনের অধ্যাপক ওয়াহিদুর রহমান দাবি করেন, ‘তার (খালেদা জিয়া) কোমরের হাড়ও ক্ষয়ে যাচ্ছে। এতে তার প্যারালাইসিস (পক্ষাঘাত) হওয়ার আশঙ্কা করছি।’
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে অবসর নেয়া চক্ষু বিশেষজ্ঞ আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘খালেদা জিয়া অন্ধ হয়ে যেতে পারেন।’
অন্য এক জন বলেন, ‘তার (বিএনপি নেত্রী) প্রশ্রাব-পায়খানাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।’
রবিবারই এক অনুষ্ঠানে চিকিৎসকদের এসব দাবি নিয়ে সন্দেহের কথা জানান কাদের। আজ তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা যেভাবে কথা বলছেন, চিৎকার করছেন আমার কাছে মনে হচ্ছে তারা বেগম জিয়ার শারিরিক অবস্থা নিয়েও রাজনীতি করছে।’
‘এখানে চিকিৎসাটা দরকার, সে ব্যপারে সরকারের কোন গাফিলতি হবে না। তবে তারা (বিএনপি) মনে হয় রাজনীতি শুরু করছে।’
বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে থাকা চিকিৎসকদের কথা উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী চিকিৎসক দল থেকে যদি সার্টিফাই করা হয় তাহলে তো হবে না। চিকৎসক যারা আছেন তাদের কোন দলীয় পরিচয় নেই। কিন্তু তাদের যে দুজন বার বার সার্টিফাই করছেন দুই জনই কিন্তু তাদের দলীয় চিকিৎসক।’
‘তাদের রাজনীতির সুরে কথাবার্তা আমরা বুজতে পারছি’- বলেন কাদের।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টি বিএনপি-আওয়ামী লীগের নয় জানিয়ে কাদের বলেন, ‘আমি এটুকু বলতে পারি, এই বিষয়টিকে এভাবে সেভাবে অর্থাৎ উদাসীনভাবে দেখার সুযোগ নেই।’
খালেদা জিয়াকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিতে বিএনপির দাবির বিষয়ে সড়ক মন্ত্রী বলেন, ‘একজন কারাবন্দীর চিকিৎসা কোথায় হবে এটা বিএনপি ঠিক করে দেবে? আমাদের নেত্রী যখন কারাগারে ছিল তখন আমরা কিন্তু বলিনি এই হাসপাতালে নিয়ে আসুন, ওই হাসপাতালে নিয়ে আসুন।’
‘এটা চিকিৎসকরাই ঠিক করবে, দরকার হলে মেডিক্যাল বোর্ড ঠিক করবে।’
তাহলে কি খালেদা জিয়াকে বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে না?- এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘যাই হবে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ও চিকিৎসকরা ঠিক করবেন। এখানে বিএনপির কথা আর আওয়ামী লীগের কথায় বেগম জিয়ার চিকিৎসা হবে না।’
‘চিকিৎসার ব্যপারটা ভিন্ন। এখানে কারাগারের নিয়ম আছে, চিকিৎসক আছে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
‘বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন সেখানে জেলকোড (কারাবিধি) অনুযায়ী সকল ব্যবস্থাই নেওয়া হবে। চিকিৎসার যেখানে যেটা প্রয়োজন সেখানে সেটাই জেলকোড অনুযায়ী করা হচ্ছে।’
অন্য দুই প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আইনি লড়াই ছাড়া বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার দ্বিতীয় কোন পথ খোলা নেই।…সরকার খালেদা জিয়াকে তো জেলে রাখছে না। রাখছে আদালত। আদালতে তারা ফাইট করুক।’
বিএনপির আন্দোলনে কাজ হবে না জানিয়ে কাদের বলেন, ‘তারা এখন আন্দোলন আন্দোলন করছে, আন্দোলনে কেউ সাড়া দেবে না। আন্দোলনে সাড়া দেওয়ার সময়ও নেই। সময় অনেক পেরিয়ে গেছে। আর জনগণ এখন নির্বাচনের মুডে আছে, আর তারা ডাক দিচ্ছে আন্দোলনের।’
‘বেগম জিয়ার ব্যাপারটায় তারা আইনিভাবে গেলে ভালো করবে। আইনি লড়াই ছাড়া খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার দ্বিতীয় কোন পথ নেই।’
নিউজটি শেয়ার করুন
এ জাতীয় আরো খবর..