আইন, প্রবাসী কলাণ ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আওয়ামী লীগ কোন নীতিগত অবস্থান থেকে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেনি। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক অপকৌশলের অংশ হিসেবে, ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে নির্মমভাবে দমন করার জন্য এই ইস্যুটিকে ব্যবহার করেছিল।
আজ সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছে, তারা (আওয়ামী লীগ) জামায়াত-বিএনপিকে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল এবং ওই ন্যারেটিভের অংশ হিসেবে হঠাৎ করে জামায়াতকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল। যে ন্যারেটিভ দিয়ে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তা সত্যি নয়। সেটা ছাত্র-জনতার বিপ্লব ছিল। ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে সন্ত্রাসী কর্মকা- হিসেবে আখ্যায়িত করে একটি দলের ওপর চাপিয়ে দিয়ে তাকে নিষিদ্ধ করা - আমরা এই মিথ্যা ন্যারেটিভের অংশ হতে পারি না। আমরা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পরাজিত ও প্রত্যাখ্যাত একটি দলের অন্যায় ন্যারেটিভের অংশ হতে পারি না।’
তিনি বলেন, জামায়াতকে আওয়ামী লীগ একটি বিশেষ সময়ে, একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে নিষিদ্ধ করেছিল। সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন করেছিল জামায়াতে ইসলামী। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জামায়াতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত এসেছে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, এটি মূলত আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। ভেটিং মানে টেকনিক্যালিটিস দেখা। অর্থাৎ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের যে কাগজটি এসেছে, তাতে শব্দ চয়ন ঠিক আছে কি-না, ভাষা চয়ন ঠিক আছে কি-না, আইন অনুযায়ী হয়েছে কি-না তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। আইন মন্ত্রণালয়ের এক্ষেত্রে কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া বা না নেয়ার কোন অবকাশ নেই।
আসিফ নজরুল স্মরণ করিয়ে দেন, আমাদের সমাজের কিছু মহল থেকে বহু বছর যাবৎ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠতো। আওয়ামী লীগ একটানা ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিল কিন্তু তারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেনি।
তিনি বলেন, ‘তারা এমন একটি বিশেষ মুহূর্তে এটা করেছে, যখন ছাত্র-জনতার বিপ্লব চলছিল, গণঅভ্যুত্থান চলছিল। তারা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে সন্ত্রাসী কর্মকা- হিসেবে আখ্যায়িত করে, এই গণঅভ্যুত্থানকে নির্মমভাবে দমন করার চেষ্টারত ছিল। এর বহু প্রমাণ রয়েছে।’