বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) লেভেল প্লেয়িং ঠিক রেখে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে চায়। আজ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমদ মারুফের সৌজন্য সাক্ষাৎকালীন তাৎক্ষণিক এক বৈঠক শেষে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদেও ব্রিফিংকালে এ কথা জানান।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর গুলশানস্থ বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক চলে।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় বিষয় ছাড়াও দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা নানা দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং স্পেশাল অ্যাসিসট্যান্ট টু দ্য চেয়ারপার্সন’স ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য শ্যামা ওবায়েদ এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ব্রিফিংয়ে জানান, এ বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যেসব সম্ভাবনা রযেছে, সেসব বিষয়েও আলোচনা হছেছে।
তিনি বলেন, ‘অবশ্যই দুই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন এবং পারস্পরিক সস্পর্ক ও শ্রদ্ধারোধ বজায় রেখে একে অপরের মধ্যকার সম্পর্ককে কীভাবে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’
বিএনপি’র সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারনী বডির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ সময় উল্লেখ করেন, মূলত ব্যবসা-বাণিজ্যের ভিত্তি হচ্ছে ‘কম্পারেটিভ এডভানটেজেস’ (তুলনামূলক সুবিধা), যা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অনেকদিন অনুপস্থিত ছিল।
বিগত সরকারের আমলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি ছিল পৃষ্ঠপোষকতার, যার কারণে কিছু মানুষ লাভবান হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছিল না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এ বৈঠকে আমরা জানিয়েছি বাংলাদেশে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হতে যাচ্ছে এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে ‘কম্পারেটিভ এডভানটেজেস’র ভিত্তিতে যার যেখানে সুবিধা হয়, সেসব জায়গায় আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করবো। শুধু বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যেই নয়, দক্ষীণ এশিয়া অঞ্চলের প্রত্যেকটি দেশের মধ্যে আমরা সহযোগিতার এই ক্ষেএ গড়ে তুলবো।’
‘দক্ষিণ এশীয় রিজিয়নটা সবচেয়ে লিস্ট ইন্টিগ্রেটিভ, সবচেয়ে কম আঞ্চলিক সহযোগিতা হয়, এক্ষেত্রে আমরা সবাই পিছিয়ে আছি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সেটাকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবো? দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে যে ইনটিগ্রেশন দরকার শুধু মাত্র অর্থনীতি নয়, সব দিক থেকে একটা ইন্টিগ্রেশন দরকার এটা আমরা কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি, তা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপি’র যে ‘পররাষ্ট্র নীতি সকলের সঙ্গে বন্ধুত’¡- সেই ভিত্তিতে আসরা এগিয়ে যেতে চাই।’
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্কসহ সব ধরনের অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনসাধারণ যেখানে উপকৃত হবে, বাংলাদেশ যেখানে উপকৃত হবে সেই ধরনের একটি অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া, যেটা বিগত দিনে অনুপস্থিত ছিল আমরা মনে করি, লেভেল প্লেয়িং ঠিক রেখে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক সহযোগিতাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাবো। এসব নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।