তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সংঘটিত প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ তদন্ত করতে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
আজ জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে (ডিডব্লিউ) এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "প্রতিটি ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করতে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা ইতিমধ্যে একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করেছি।"
সংঘাতে জড়িত পক্ষগুলোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আরাফাত বলেন, "এখনও বৈশ্বিক মিডিয়া এমন একটি সমীকরণে আটকে আছে যা হচ্ছে সরকার বনাম ছাত্র বিক্ষোভকারী। কিন্তু ব্যাপারটা মোটেও তা নয়। সেখানে তৃতীয় পক্ষ ছিল। তৃতীয় পক্ষ মানে বিএনপি, জামায়াত এবং শিবির, ইসলামি উগ্রবাদী। তারাই আসলে ধ্বংস ও সহিংসতা চালিয়েছে।" তিনি বলেন, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে কিছু লোক এই পরিস্থিতির মধ্যে আটকে পড়ে যার ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার তথ্য সত্য নয়। সরকারি হিসাব অনুযায়ী মোট সংখ্যা ১৫০জন বলে প্রতিমন্ত্রী জানান।
আরাফাত বলেন,"১৫০ জনের মধ্যে, এমন অনেকে ছিল যাদেরকে হামলাকারীরা পুড়িয়ে ফেলে। আমরা তাদের পরিচয়ও সনাক্ত করতে পারিনি।" হতাহতদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের অনেক লোকও ছিল।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার জনগণের শান্তি ও জীবন রক্ষায় সর্বোচ্চ অঙ্গীকার নিয়ে কাজ করছে। ছাত্রদের বিক্ষোভে জঙ্গি গোষ্ঠীর অনুপ্রবেশের পর জনগনের জীবন রক্ষা এবং শান্তি পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ নেয়া সরকারের কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়।
তিনি বলেন, দুর্বৃত্তরা কারাগারে প্রবেশ করে নয়জন শীর্ষস্থানীয় জিহাদিসহ প্রায় ৮২৬ বন্দিকে কারাগার থেকে পালাতে বাধ্য করে এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করে।
আরাফাত বলেন, জঙ্গিরা পুলিশের ২৩৫টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, ৬৯টি পুলিশ ফাঁড়ি ধ্বংস করেছে এবং অনেক পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। পুলিশকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রায় ১,১১৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন এবং তাদের মধ্যে ১৩২ জনের অবস্থা গুরুতর। তারা মেট্রোরেল স্টেশন, বিটিভি ভবন এবং সকল গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা চালায়।
আরাফাত বলেন, "আমরা বিএনপি, জামাত এবং ইসলামি উগ্রপন্থীদের হামলা চালানোর একটি স্পষ্ট হাতে লেখা নির্দেশনা দেখেছি।"
তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলনকারীদের নেতারাও এসব ধ্বংসযজ্ঞ ও সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, তৃতীয় পক্ষ তাদেরকে অপব্যবহার করেছে।
আরাফাত বলেন, কিছু ছাত্র তাদের বন্ধুদের হারিয়েছে। তারা মনে করে সমাজে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে এবং সরকার পতন ঘটাতে নৈরাজ্যবাদীরা এই হত্যাকান্ড চালিয়েছে ।
আরাফাত জোর দিয়ে বলেন, তৃতীয় পক্ষের অনুপ্রবেশের ফলে আন্দোলন অনেক দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার দিকে চলে যায়।