দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি এবং নতুন উদ্যোগ প্রণয়নের জন্য চিকিৎসা সেবাখাতে আরো বেশি গবেষণা প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ডায়াবেটিস প্রতিরোধসহ বিভিন্ন রোগের ওপর গবেষণা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এসব গবেষণা কার্যক্রম সফল হলে বছরে শত কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব হবে। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘চিকিৎসকদের গবেষণায় সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি: চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ-সুবিধা’ শীর্ষক এক গবেষণা কর্মশালা ও সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো: শারফুদ্দিন আহমেদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে একটি সমৃদ্ধ গবেষণা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পারে, যার ফলে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা, উদ্ভাবনী রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং কার্যকরভাবে দেশের স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। তিনি বলেন, বেশ কিছু উদ্যোগের বাস্তবায়ন গবেষণা সংস্কৃতি বিকাশে কাজ করছে। বর্তমানে গবেষণা ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েছে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধেও গবেষণা কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এটা সফল করতে পারলে, বছরে শত কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব। করোনা ভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্সিং এর দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব, ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা নির্ণয়সহ এ বিষয়ে অনেকগুলো গবেষণা কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে এবং কোনো কোনো গবেষণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, যদিও চিকিৎসকদের গবেষণা সম্পর্কে কিছু ধারণা রয়েছে, তবে মাত্র ১২.৮ শতাংশ আন্তর্জাতিক জার্নালে কোনো ম্যানুস্ক্রিপ্ট জমা দিয়েছেন। গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়, প্রায় ৩.৮ শতাংশ চিকিৎসকের গবেষণা ম্যানুস্ক্রিপ্ট লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং ১৫.৬ শতাংশ চিকিৎসক এসপিএসএস বা এসটিএটিএ’র মতো পরিসংখ্যানগত সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি এবং নতুন উদ্যোগ প্রণয়নের জন্য গবেষণা অপরিহার্য। বাংলাদেশের চারটি টারশিয়ারি কেয়ার হাসপাতালের মোট ৫০০ জন চিকিৎসক এই গবেষণায় অংশ নেন।
গবেষণার ফলাফলে চিকিৎসকদের পেশাগত কাজের অতিরিক্ত চাপ, অনুদান না থাকা এবং গবেষণায় ইতোপূর্বের জ্ঞান কিছুটা কম থাকার মতো বিষয়গুলোকে- গবেষণার জন্য জরুরি হিসাবে, প্রস্তাবিত সুপারিশ আকারে তুলে ধরা হয়। আলোচনায় ও গবেষণায় প্রাপ্ত সুপারিশসমূহে চিকিৎসকদের গবেষণায় সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর যৌথ ও সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা ও প্রয়োজনীয় ফান্ড নিশ্চিতকরণের উপর গুরুতা¡রোপ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগ এবং ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এ্যাসুরেন্স সেল, রিসার্চ সেল এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এক গবেষণাপত্রে এই সুপারিশ করা হয়।
সেমিনার ও কর্মশালায় কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা চ্যালেঞ্জ, সুযোগ, গবেষণা বৃদ্ধিতে সরকারের ভূমিকা এবং গবেষণা উন্নয়নে প্রাতিষ্ঠানিক ভূমিকাসহ চারটি বিষয়ের উপর একটি উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স এর চেয়ারম্যান এবং প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো:আতিকুল হক, গবেষণায় চিকিৎসকদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির উপর চলমান গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন।