ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের মামলায় বুয়েট শিক্ষক অধ্যাপক ড. নিখিল রঞ্জন ধরসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে করা বাড্ডা থানার মামলার অভিযোগ গঠনের ফলে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত এ অভিযোগ গঠন করেন।
এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন-পরীক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম ওরফে স্বপন (৩৬), জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা শামসুল হক ওরফে শ্যামল (৩৪) ও আবদুল্লাহ আল জাবের (৩৪), আহ্ছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনিশিয়ান মুক্তারুজ্জামান ওরফে রয়েল (২৬), পিয়ন দেলোয়ার হোসেন (৩১), কর্মী রবিউল আউয়াল (৪১), পারভেজ মিয়া (২৬), মিজানুর রহমান মিজান (৩৭), মোবিন উদ্দিন (৩২), মোস্তাফিজুর রহমান (৩৭), সোহেল রানা (৩৫), পরীক্ষার্থী রাশেদ আহমেদ ওরফে বাবলু (৩৭), জাহাঙ্গীর আলম জাহিদ (৩৮), রবিউল ইসলাম ওরফে রবি (৪১) এবং রূপালী ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানে আলম ওরফে মিলন (৩২)।
চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও জোনাল টিমের সাব-ইন্সপেক্টর শামীম আহমেদ আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। তবে ড. নিখিল রঞ্জন ধর পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
এরপর গত ৫ মার্চ আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন নিখিল রঞ্জন ধর। ওইদিন আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, পাঁচটি ব্যাংকে অফিসার (ক্যাশ) পদে এক হাজার ৫১১ জন জনকে নিয়োগ দিতে ২০২১ সালের ৬ নভেম্বর বিকেলে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্রে এমসিকিউ পদ্ধতিতে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকের সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে প্রশ্নপত্র তৈরি ও পরীক্ষা সম্পাদনের দায়িত্বে ছিল আহছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।
পরবর্তীতে পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হবে- ২০২১ সালের ৫ নভেম্বর রাতে এমন তথ্য আসে ডিবির কাছে। ডিবির টিমের সদস্যরা ছদ্মবেশে পরীক্ষার্থী সেজে ৬ নভেম্বর সকাল সাতটার দিকে প্রশ্নপত্রসহ উত্তর পাওয়ার জন্য চক্রের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অগ্রিম টাকা পরিশোধের পর প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা রাইসুল ইসলাম স্বপন ডিবির ছদ্মবেশী পরীক্ষার্থীকে নিয়ে যান। এরপর পরীক্ষার উত্তরপত্রসহ স্বপনকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
২০২১ সালের ৬ নভেম্বর পরীক্ষার প্রকৃত প্রশ্নের সঙ্গে সকালে পাওয়া প্রশ্ন ও উত্তর হুবহু মিলে গেলে স্বপনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রূপালী ব্যাংকের সাভার শাখার শ্রীনগর থেকে জানে আলম মিলনকে গ্রেফতার করা হয়। রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র সরবরাহকারী শামসুল হক শ্যামলকে ধরতে প্রথমে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অভিযান চালানো হয়। পরে জানা যায়, শ্যামল ঢাকায় অবস্থান করছেন। এরপর ঢাকার দক্ষিণ বাড্ডা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আর ১০ নভেম্বর রাতে সোহেল, খোকন ও জাহিদকে গ্রেফতার করা হয়।