রাজধানীর শ্যামপুরে ৬ দশমিক ১৭ একর জমির উপর ৭১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫৪টি অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম ও তিনতলা বিশিষ্ট দু’টি অফিস ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
আগামী রোববার (৪ জুন) নবনির্মিত রাসায়নিক গুদামগুলোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নবনির্মিত এই অস্থায়ী রাসায়নিক গুদামগুলোর উদ্বোধন করবেন।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, স্থানীয় সংসদ সদস্য (ঢাকা-৪ আসন) সৈয়দ আবু হোসেন, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা, প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মো: আব্দুল্লাহ আল মাকসুস এবং বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান মোঃ সাইদুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) উদ্যোগে ‘অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নি দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য নির্মিত গুদাম’ প্রকল্পের মাধ্যমে পুরাতন ঢাকার শ্যামপুরে অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ করা হয়েছে।
২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে রাসায়নিক পদার্থের গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়। পরবর্তীতে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। সেদিনের ঘটনায় ৭৮ জন প্রাণ হারায়।
এ দু’টি মর্মান্তিক দূর্ঘটনায় সরকারের টনক নড়ে। ভবিষ্যতে, রাসায়নিক কারখানা ও গুদামে বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে-লক্ষ্যে সরকার পুরান ঢাকায় অবস্থিত রাসায়নিক পদার্থ-মজুদের গুদাম ও কারখানাগুলো নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বৈধ ব্যবসায়ীদের বিপদজনক কেমিক্যাল সাময়িকভাবে সংরক্ষণের জন্য রাজধানীর শ্যামপুরে বিসিআইসি’র আওতাধীন উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরির পরিত্যাক্ত জায়গায় গুদাম নির্মাণের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় এগিয়ে আসে।
পুরান ঢাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব রাসায়নিক কারখানা ও গুদামগুলো একটি নিরাপদ জায়গায় যথাসম্ভব দ্রুত সময়ে স্থানান্তরের লক্ষ্যে সরকার জরুরি ভিত্তিতে ‘শ্যামপুরে উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরির জায়গায় ‘অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য গুদাম নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্পটি গ্রহণ করে এবং এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভূক্ত প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে রাসায়নিক দ্রব্যাদি নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ এবং পুরান ঢাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে সংরক্ষিত রাসায়নিক পদার্থ দ্রুত স্থানান্তর ও নিরাপদভাবে সংরক্ষণের জন্য গুদাম নির্মাণ করা। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ ২০১৯ সালের মার্চে শুরু হয়। চার বছরের মাথায় সম্প্রতি এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড’র মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করা হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ৫৪টি গুদাম এবং তিনতলা বিশিষ্ট দু’টি অফিস ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।