জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার (লিগ্যাল এইড) আইনগত সহায়তা সেলে সরকারি খরচায় আইনি সহায়তা পাচ্ছেন শ্রমিকরা।সংস্থার অধীনে ঢাকা ও চট্রগ্রাম শ্রমিক আইনগত সহায়তা সেলে ১৯ হাজার ৭৮৪ জনকে বিনামূল্যে আইনি সেবা প্রদান করা হয়েছে। জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, প্রি ও পোষ্টকেইসে ৬৪ জেলা লিগ্যাল এইড অফিস ও শ্রমিক আইনগত সহায়তা সেলে ক্ষতিপূরণ আদায় হয়েছে ১১৭ কোটি ১৪ লাখ ৮৭ হাজার ৪৭৭ টাকা। সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ, দেশের সব নিম্ন আদালত, শ্রম আাদালতে সরকারি খরচায় অসচ্ছল জনগোষ্ঠীকে লিগ্যাল এইড দেয়া হয়।
এদিকে আগামী ২৮ এপ্রিল ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস’ পালিত হবে। দিবসটি পালনে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি থাকছে।
এছাড়া কেন্দ্রীয় ভাবে আয়োজনের পাশাপাশি জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা সারা দেশের জেলা, উপজেলা, সকল আদালত, চৌকি আদালতে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে অনুষ্টানের উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার পরিচালক (জেলা জজ) মোহাম্মদ আল মামুন স্বাক্ষরিত স্মারকে দিবসটি পালনে করনীয় সংশ্লিষ্টদের প্রতি উল্লেখ করা হয়েছে। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরতে ওইদিন র্যালি, আলোচনা সভাসহ নানা আয়োজনের জন্য বলা হয়েছে।
গতবছরও কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ে র্যালি, আলোচনা সভা, পথ প্রচার, লিগ্যাল এইড মেলা, ক্লায়েন্ট-আইনজীবী যৌথ সভা, সেরা প্যানেল আইনজীবী পুরস্কার, ম্যাগাজিন, স্যুভেনির ও দেয়ালিকা প্রকাশ, আলোকচিত্র প্রদর্শন, প্রচার ও প্রকাশনা সামগ্রী বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সংবাদপত্রে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী এবং আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের বাণীসহ আইনগত সহায়তা বিষয়ক প্রতিবেদন সম্বলিত বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ ছাড়াও রেডিও ও টেলিভিশনে আইনগত সহায়তা প্রদান সংক্রান্ত টকশো বা মুক্ত আলোচনা, সংবাদ ও অনুষ্ঠান সম্প্রচারের আয়োজন করা হয়।
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত কর্মকান্ডের তথ্য-পরিসংখ্যান সম্বলিত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।
দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী, শ্রমিক, সহিংসতার শিকার নারী-শিশু এবং পাচারের শিকার মানুষের জন্য আইনি সেবা নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার জাতীয় আইনগত সহায়তা আইন-২০০০ প্রণয়নের মধ্যদিয়ে সরকারি খরচায় আইনগত সহায়তা কার্যক্রম শুরু করে। পরে এই আইনের অধীনে বিভিন্ন বিধি প্রণীত হয়। বিধিতে কারা আইনি সহায়তা পাবেন তা নির্ধারণ করা হয়।
দেশের সবক’টি জেলা আদালত, শ্রম আদালত, চৌকি আদালত এবং সুপ্রিম কোর্টে লিগ্যাল এইড সার্ভিস চালু রয়েছে। জেলা লিগ্যাল এইড অফিসগুলোকে এখন শুধু আইনি সহায়তা প্রদানের কেন্দ্র হিসেবেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি, মামলা জট কমানোর লক্ষ্যে এ অফিসগুলোকে ‘এডিআর কর্ণার’ বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কেন্দ্রস্থল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পক্ষসমূহের সম্মতির ভিত্তিতে লিগ্যাল এইড অফিসে বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়ে থাকে।
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসটির প্রথম অনুষ্ঠান ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিগ্যাল এইড কল সেন্টার ‘জাতীয় হেল্পলাইন’-এর উদ্বোধন করেন। এ হেল্পলাইনে ১৬৪৩০ নম্বরে ফোন করে যেকোন ব্যক্তি জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার মাধ্যমে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পাচ্ছেন।