আগামী রোববার থেকে শুরু হচ্ছে শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশ যুব গেমসের চূড়ান্ত পর্ব। প্রধান অতিথি হিসেবে সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে গেমসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যুব গেমস উপলক্ষে আজ বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের (বিওএ) ডাচ বাংলা ব্যাংক অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন বিওএ মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন মিডিয়া এবং পাবলিসিটি উপ-কমিটির চেয়ারম্যান শেখ বশির আহমেদ, গেমস স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মিকু, টেকনিক্যাল উপ-কমিটির সদস্য সচিব এ কে সরকার, এবং গেমসের প্রধান সমন্বয়কারী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
বিওএ মহাসচিব বলেন,বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনায় ২০১৮ সালে প্রথমবারের মত যুব গেমসের আয়োজন করা হয়েছিল। বিভিন্ন ডিসিপ্লিনে জাতীয় দলের জন্য ভবিষ্যত খেলোয়াড় বাছাই এবং তরুন ক্রীড়াবিদদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দেয়াই ছিল এই গেমসের মূল লক্ষ্য। একইসাথে তরুন ক্রীড়াবিদদের দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করতেই বিওএ এ উদ্যোগ নেয়। প্রতি চার বছরে একটি বাংলাদেশ গেমস ও একটি যুব গেমস ২০১৮ সাল থেকে নিয়মিত আয়োজিত হয়ে আসছে। প্রথম আসরে ২১টি ডিসিপ্লিনে ৫০ হাজার ক্রীড়াবিদ, কোচ, টেকনিক্যাল অফিসিয়াল ও ক্রীড়া সংগঠক অংশ নিয়েছিল। এবার ২য় আসরে একক ও দলীয়সহ ডিসিপ্লিনের সংখ্যা তিনটি বাড়িয়ে ২৪টি করা হয়েছে।
চূড়ান্ত পর্বে ২৪টি ডিসিপ্লিনের ১৯৩টি ইভেন্টে ১৯৩টি স্বর্ণ, ১৯৩টি রৌপ্য ও ২৮৭টি তা¤্র পদকের জন্য প্রায় ৪ হাজার ক্রীড়াবিদ অংশগ্রহণ করবে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের নামে যুব গেমসের দ্বিতীয় আসরের নামকরণ করা হয়েছে ‘শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশ যুব গেমস ২০২৩’।
এবারের গেমসও আন্ত:উপজেলা, জেলা, ও বিভাগ বা জাতীয়- এই তিন স্তরে পরিচালিত হচ্ছে। প্রথম স্তরে ৬৪টি জেলার সকল উপজেলার থেকে অনুর্ধ্ব ১৭ বয়সী ক্রীড়াবিদরা অংশ নেয়। গত ২-১০ জানুয়ারি প্রথম পর্ব আন্ত: উপজেলা অনুষ্ঠিত হয়। ১৬-২২ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বে আন্ত:জেলা প্রতিযোগিতায় ৬৪ জেলার ক্রীড়াবিদরা অংশ নেয়। এরপর চূড়ান্ত পর্বে আটটি বিভাগ ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিচ্ছে।
শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশ যুব গেমস সুষ্ঠ ও সফলভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান পৃষ্ঠপোষক করে একটি শক্তিশালী সাংগঠনিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, এফসিএকে। কো-চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, এমপি এবং বিওএ সভাপতি ও সেনাবাহনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, এসবিপি (বার), ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, পিএইচডি। এছাড়াও গেমস আয়োজনের রয়েছে ১টি স্টিয়ারিং কমিটি ও ১৩টি উপ-কমিটি।
গেমস উপলক্ষ্যে একটি বর্ণাঢ্য মশাল র্যালি আগামীকাল গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি প্রাঙ্গন থেকে থেকে শুরু হবে। সমাধি প্রাঙ্গনে মশাল প্রজ্জলন করবেন বিওএ সভাপতি ও সেনাবাহনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, এসবিপি (বার), ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, পিএইচডি। সেখান থেকে বিভিন্ন জেলা প্রদক্ষিন করে মশাল বিওএ ভবনে আসবে। এরপরমশালটি ঢাকা আবাহনী লিমিটেড ক্লাবে আনা হবে। সেখান থেকে মশালটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানস্থল বনানী আর্মি স্টেডিয়মে নেয়া হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মশাল প্রজ্জ্বলন করবেন স্প্রিন্টার ইমরানুর রহমান ও কারাতেকা মারজান আক্তার।
গেমসে অংশগ্রহণকারী ক্রীড়াবিদদের পক্ষে শপথ বাক্য পাঠ করবেন বাংলাদেশের দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তার। বিচারকদের পক্ষে শপথবাক্য পাঠ করবেন জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রাপ্ত সাবেক ফিফা এলিট রেফারি তৈয়ব হাসান শামসুজ্জামান।
শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশ যুব গেমসের পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংকস, সাইফ পাওয়ারটেক ও ওয়ালটন।
গেমসে ২৪টি ডিসিপ্লিন তাদের স্ব স্ব ফেডারেশনের তত্ববধানে নিজস্ব ভেন্যুতে সাত দিনব্যাপী চলবে।
সূচি:
২৭ ফেব্রুয়ারি-৩ মার্চ আর্মি স্টেডিয়ামের সেনা নিয়ন্ত্রন বোর্ডের বাস্কেটবল কোর্টে বাস্কেটবল, ২৫ ফেব্রুয়ারি-৩ মার্চ বাফুফের আর্টিফিসিয়াল টার্ফ মাঠে ফুটবল, ২৬ ফেব্রুয়ারি-২ মার্চ শহীদ (ক্যাপ্টেন) এম. মনসুর আলী জাতীয় হ্যান্ডবল স্টেডিয়মে হ্যান্ডবল, ২৬ ফেব্রুয়ারি-২ মার্চ মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে হকি, ২৬ ফেব্রুয়ারি-৩ মার্চ কাবাডি স্টেডিয়ামে কাবাডি, ১-৩ মার্চ পল্টন ময়দান মাঠে রাগবী, ২৫ ফেব্রুয়ারি-১ মার্চ শহীদ নূর হোসেন জাতীয় ভলিবল স্টেয়িামে ভলিবল, ১-৩ মার্চ টঙ্গীস্থ শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে আরচ্যারি, ১-৩ মার্চ বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে এ্যাথলেটিক্স, ২৬-২৮ ফেব্রুয়ারি শহীদ তাজউদ্দিন ইনডোর স্টেডিয়ামে ব্যাডমিন্টন, ২৭ ফেব্রুয়ারি-২ মার্চ মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়ামে বক্সিং, ২৫-২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের দাবা ক্রীড়া কক্ষে দাবা, ১-৩ মার্চ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জিমন্যেসিয়ামে জিমন্যাস্টিক্স, ২৬-২৮ ফেব্রুয়ারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে জুডো, ১-২ মার্চ শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে কারাতে, ১-৩ মার্চ বাংলাদেশ শ্যূটিং স্পোর্টস ফেডারেশনে শ্যূটিং, ২-৪ মার্চ সৈয়দ নজরুল ইসলাম জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্সে সাঁতার, ২৮ ফেব্রুয়ারি-২ মার্চ আর্মি স্কোয়াশ কমপ্লেক্সে স্কোয়াশ, ২৭-২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে সাইক্লিং, ১-৩ মার্চ শহীদ তাজউদ্দিন ইনডোর স্টেডিয়ামে টেবিল টেনিস, ২৬-২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জিমন্যেসিয়ামে তায়কোয়ানডো, ২৭ ফেব্রুয়ারি-১ মার্চ আর্মি স্টেডিয়ামের সেনা ক্রীড়া নিয়ন্ত্রন বোর্ডের উশু শেডে ভারোত্তোলন, ১-৩ মার্চ শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সে কুস্তি ও ২-৪ মার্চ শহীদ নূর হোসেন জাতীয় ভলিবল স্টেডিয়ামে উশু প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ৪ মার্চ পর্দা নামবে সাতদিন ব্যপী শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশ যুব গেমসের। বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিওএ সভাপতি ও সেবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, এসবিপি (বার), ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, পিএইচডি।