বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে চুক্তির ফলে পাহাড়ে শান্তি ফিরে আসেছে।
তিনি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি সারা বিশে^ ব্যাপকভাবে স্বীকৃতি । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী এ পদক্ষেপের ফলে পাহাড়ে শান্তি ফিরে আসেছে।’
তিনি বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তির সুফল হিসেবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, যোগাযোগ, অবকাঠামোরসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সাধারণ মানুষের সামাজিক অবস্থান ও জীবনমান উন্নয়ন হয়েছে।
শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৫তম বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে তিনি এ সব কথা বলেন। পরে তিনি বান্দরবানের অরুণ সারকী টাউন হলে আয়োজিত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতা করেন।
ক্যশৈহ্লা বলেন, শান্তি চুক্তির মোট ৭২ টি ধারার ৪৮ টি ধারা বাস্তবায়ন হয়েছে। কোন কোন ধারা আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে, আবার কোন কোন ধারা বাস্তবায়ন হয়নি। এটা ধ্রুব সত্য, এটা লুকিয়ে রাখা সম্ভব নয় ।
এরআগে সকালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যাগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৫তম বর্ষপূর্তি উদযাপন এর শুভ সুচনা করা হয়। পরে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে অরুণ সারকী টাউন হলে গিয়ে সমবেত হয়। বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রায় পার্বত্য এলাকার ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায় ও বাঙ্গালীরা মিলে বর্ণিল পোষাক ও ব্যানার এবং ফেস্টুন হাতে নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে শান্তিচুক্তির ২৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বান্দরবানে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভার পাশাপাশি বিনামূল্যে গরীব ও অসহায়দের চিকিৎসা সেবা, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচীর আয়োজন করেছে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও সেনাবাহিনী।
অরুণ সারকী টাউন হলে সভায় সভাপতির বক্তৃতায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অশান্তির মূল বিষয় ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা। এখানে পাহাড়ি জনগণের মাঝে বংশপরস্পরায় প্রচলিত প্রথাগত নিয়ম রয়েছে । সেটি তারা সবসময় মেনে চলছে। তাদের বেশিরভাগ জনগন ভূমি বন্দোবস্ত নেয় । সরকারি নিয়ম অনুযায়ি তারা ভূমিহীন। এখনও তারা নিজ নিজ মৌজায় জুম চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছে।
অনুষ্ঠানে বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জিয়াউল হক, পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক মো.লুৎফুর রহমান, পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবী, পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এটি এম কাউছার হোসেন, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর,লক্ষীপদ দাশসহ সরকারী- বেসরকারী কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, পাহাড়ে কৃষি জমির নামে সমতলবাসীদের ২৫ একর করে লীজ দেওয়া হয়েছে। সঠিক ভাবে জরিপ না করে জমিগুলো দেয়া হয়েছে, যার কারণে লীজগ্রহীতারা খেয়াল খুশিমত পাহাড়গুলো দখল করে নিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে স্থানীয়দের খাল, ঝিড়ি, জমিও বাদ যায়নি। ফলে লীজগ্রহীতাদের সাথে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও সংঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।