ঋণের বিপরীতে কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান চেক ডিজঅনার মামলা করতে পারবে না বলে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগ বেঞ্চ এ সংক্রান্ত হাইকোর্ট রায় স্থগিত করে আজ আদেশ দিয়েছেন।
শুনানিতে ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন।
আদালতের আদেশের বিষয়টি বাসস’কে জানান ব্র্যাক ব্যাংক পক্ষের আইনজীবী সাইফুজ্জামান তুহিন। তিনি জানান, চেক ডিজঅনার সংক্রান্ত গত ২৩ নভেম্বর রায় দিয়েছিলেন বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ। আজ ওই রায়টি হাইকোর্ট প্রকাশ করেছে। এখন আপিল বিভাগে রেগুলার পিটিশন দায়ের করা হবে।
ব্র্যাক ব্যাংক হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে।
গত ২৮ নভেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট আবেদন বিষয়ে আজ ১ ডিসেম্বর শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে প্রেরণ করেন। সে অনুয়ায়ি আজ আপিল বিভাগে শুনানি ও আদেশ দেয়া হয়।
কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে চেক ডিজঅনার মামলা করতে পারবে না বলে গত ২৩ নভেম্বর রায় দেয় হাইকোর্ট।
ঋণ আদায়ের জন্য ব্র্যাংক ব্যাংকের চেক ডিজঅনার মামলায় এক ব্যক্তির আনা আপিল মামলার শুনানি শেষে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
রায়ে বলা হয়েছে, রায়ের দিন হতে চেক ডিজঅনার সকল মামলা যে পর্যায়ে আছে সে পর্যায়ে স্থগিত থাকবে। তাছাড়া ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক সকল প্রকার ঋণের বিপরীতে ইন্সুরেন্স কাভারেজ থাকতে হবে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশনা এবং জাতীয় সংসদকে আইন সংশোধনের পরামর্শ প্রদান করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
রায়ে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে বলেন, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান যদি চেক ডিজঅনার মামলা করে তা আমলে না নিতে নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতের আদেশ ও রায়ের বিষয়টি বাসস’কে জানান ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে আইনজীবী সাইফুজ্জামান তুহিন।
তিনি জানান, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ আদায়ের জন্য শুধুমাত্র ২০০৩ সালের অর্থঋণ আইনের বর্ণিত উপায়ে অর্থঋণ আদালতে মামলা করতে পারবে।
ব্র্যাক ব্যাংকের এক মামলায় ব্যক্তির ছয় মাসের কারাদন্ড এবং ২ লাখ ৯৫ হাজার ৯০৪ টাকা অর্থদন্ড হয়। ওই সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হয়। দন্ডিতের আপিল মঞ্জুর করে রায়ের দশ দিনের মধ্যে জামানতের ৫০% টাকা আপিলকারীকে ফেরতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
হাইকোর্টে মামলার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আব্দুল্লাহ আল বাকী। ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাইফুজ্জামান তুহিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল আশেক মমিন।