গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিম্ন আদালতের দেয়া অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট।
আজ আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম হাইকোর্টের দেয়া আদেশ আগামী ৫ ডিসেম্বর, সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করে এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে মামলাটি শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান।
আদালতে আবেদনকারী জিয়াউল হক মৃধার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা।
জিএম কাদেরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। এ আদেশের ফলে আপাতত জিএম কাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে জানিয়েছে আইনজীবীরা।
৪ অক্টোবর জাপা থেকে বহিষ্কৃত নেতা দলটির সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন। বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত ১ নম্বর প্রতিপক্ষ (জি এম কাদের) ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বরের গঠনতন্ত্রের আলোকে পার্টির কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করতে পারে এবং কোনো কার্য গ্রহণ করতে না পারে সে মর্মে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেয়।
পরে এই আদেশ প্রত্যাহারে জি এম কাদেরের আবেদন ১৬ নভেম্বর খারিজ করে দেয় একই আদালত।
আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম জানান, এই খারিজাদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে মিস আপিল করেন জিএম কাদের। জেলা জজ আদালত এই আবেদন শুনানির জন্য ৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ২৪ নভেম্বর এক দরখাস্তে বলেছি শুনানির তারিখ আগামী ৯ জানুয়ারি রাখাতে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। কারণ, আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ আছে। এতে অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। তাই আজেকই শুনানি করেন। আমাদের ২৪ তারিখের আবেদন জেলা জজ নাকচ করে দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমরা রিভিশন করেছি। আমরা হাইকোর্টে বলেছি ২৪ তারিখের আদেশটা অবৈধ। আদালত রুল দিলেন। আর ৩০ অক্টোবরের নিষেধাজ্ঞার আদেশ ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করে। এরপর আজ জিয়াউল মৃধা হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন বলে জানান তিনি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। এরপর বিবাদী জি এম কাদের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছর ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন। ৫ মার্চ গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মো. আজিজকে বহিষ্কার করেন। ১৪ সেপ্টেম্বর বাদী মশিউর রহমান রাঙ্গাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেন। অন্যদিকে ১৭ সেপ্টেম্বর এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকেও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন, যা অবৈধ।