ডেসটিনির চেয়ারম্যান সাবেক সেনা প্রধান হারুন-অর-রশিদসহ ৪৫ জনকে বিচারিক আদালতের দেয়া সাজা বৃদ্ধির আর্জি পেশ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আনা আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
ডেপুটি এটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের জানান, ডেসটিনির মামলায় লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) এম হারুন-অর-রশীদসহ ৪৫ জনের সাজা বৃদ্ধির জন্য দুদকের করা আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। তবে এ আবেদন হারুনের আপিলের সঙ্গে একসঙ্গে শুনানি হবে।
দুদকের পক্ষে সিনিয়র এডভোকেট খুরশীদ আলম খান জানান, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনকে দেয়া হয়েছে ১২ বছরের দন্ড। বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে কম দন্ড দেয়া হয়েছে। অথচ এটা হলো অর্গানাইজড ক্রাইম। এখানে কম বেশি দেয়ার সুযোগ নেই। তাই রফিকুল আমীন ছাড়া বাকিদের দন্ড বাড়াতে আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের আপিল গত বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। তবে তাকে জামিন দেননি আদালত।
চলতি বছরের ১২ মে বিচারিক আদালতে এ মামলার রায় হয়। রায়ে ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনসহ ৪৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড এবং তাদের দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে হারুন-অর-রশীদকে দেয়া হয় চার বছরের কারাদন্ড। সেই সঙ্গে তাকে সাড়ে তিন কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে ছয় মাস কারাদন্ড দেয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেছেন।
২০১২ সালের ৩১ জুলাই দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার ও সহকারী পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসিটিনির কর্তাব্যক্তিসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন প্রজেক্টের অর্থ আত্মসাতের দুটি মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৫ মে দুদক আদালতে উভয় মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এর মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ৪৬ জন এবং ডেসটিনি ট্রি প্লানটেশন লিমিটেডে দুর্নীতির মামলার ১৯ জনকে আসামি করা হয়। হারুন-অর-রশিদ ও রফিকুল আমিন দুই মামলাতেই আসামি।
বিচারিক আদালতের দেয়া রায়ে রফিকুল আমীনকে ১২ বছর কারাদন্ড এবং ২০০ কোটি টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। ৪৬ আসামির মধ্যে ৩৯ জন আসামি পলাতক।