ভোজ্যতেল মজুদের বিরুদ্ধে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চলমান অভিযান ব্যবসায়ী বা অন্য কাউকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে হয়রানি করতে চাই না। আমাদের লক্ষ্যে হলো- সবার কাছে এই বার্তা দেওয়া যে, সরকার ভোজ্যতেল মজুদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে। যাতে বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ বজায় থাকে।’
সোমবার বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন আয়োজিত ‘ব্যবসা-বাণিজ্যে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিতকরণে ব্যবসায়ী সংগঠনসমূহের ভূমিকা’শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর ইস্কাটনে প্রতিযোগিতা কমিশন কার্যালয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন মো. মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসান, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে গত ঈদুল ফিতরের সময় খুচরা ও ডিলার পর্যায়ে অনেক ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার জন্যে অবৈধভাবে ভোজ্যতেল মজুদ শুরু করে। এর বিরুদ্ধে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। ঈদের পরবর্তীতে গত দুই সপ্তাহে এসব অভিযানে বিপুল পরিমাণ তেল উদ্ধার হয়েছে।
টিপু মুনশি বলেন, সরকার চাই দেশের বাজারে আস্থার পরিবেশ তৈরি হোক। কেউ যেন মনোপলি বা অলিগোপলির সুযোগ না নিতে পারে। সেজন্য প্রতিযোগিতা আইন সৃষ্টি করা হয়েছে।এখন এর যথাপোযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চলমান অভিযানের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীদের কার্যক্রমে কোন ধরনের বাধা দেওয়া এর উদ্দেশ্য নয়। আমরা দেশবাসীকে স্বস্তি দিতে চাই। প্রতিযোগিতা বিরোধী কর্মকান্ড যেন বাজারে না থাকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতিযোগিতা আইন সম্পর্কে দেশবাসীকে সচেতন করার উপর গুরুত্বারোপ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, উৎপাদক, বিপণনকারী, ভোক্তা থেকে শুরু করে সর্বত্র সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করে দিতে সরকার এই আইন করেছে। দেশের জনগন এই আইন থেকে কিভাবে উপকৃত হবেন, সে বিষয়ে তাদের সচেতন করতে প্রতিযোগিতা কমিশনকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসীম উদ্দিন বলেন, ভোজ্যতেল মজুদের বিরুদ্ধে যত্রতত্র অভিযান পরিচালনা করার কারণে কোন সৎ ব্যবসায়ী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেদিকে নজর রাখাটা জরুরি। তিনি ঢাকা-চট্টগ্রামের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আইনের বিষয়ে সচেতনতা তৈরির উপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, বাজারে প্রতিযোগিতা পরিপন্থী কর্মকান্ড বন্ধে প্রতিযোগিতা আইনের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রয়োজন।
সেমিনারে প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য জি. এম. সালেহ উদ্দিন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠনে প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।