বাংলাদেশী বোলারদের দৃঢ়তায় ডারবান টেস্টের প্রথম দিন ৭৬ দশমিক ৫ ওভারে ৪ উইকেটে ২৩৩ রান করেছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা।
সিরিজের প্রথম টেস্টে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মোমিনুল হক। ব্যাট হাতে দারুন শুরু করেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার ডিন এলগার ও সারেল এরইউ। বাংলাদেশ বোলারদের দেখেশুনে খেলে ১২তম ওভারে দলের স্কোর ৫০এ নিয়ে যান তারা।
এরপর প্রথম সেশনে অনায়াসে কাটিয়ে দেন এলগার ও এরইউ। প্রথম সেশনে ২৫ ওভারে বিনা উইকেটে ৯৫ রান পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এ সময় টেস্ট ক্যারিয়ারের ২০তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৬০ রানে অপরাজিত থাকেন এলগার। ৩২ রান ছিলো এরইউর।
প্রথম সেশনটা নিজেদের মতো কাটাতে না পারলেও, দ্বিতীয় সেশনে ঘুড়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশের বোলাররা। দ্বিতীয় সেশনের নবম ওভারেই দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন বাংলাদেশের পেসার খালেদ আহমেদ।
দলীয় ১১৩ রানে খালেদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন এলগার। ১০১ বল খেলে ১১টি চারে ৬৭ রান করেন এলগার।
৩৪তম ওভারের এলগারের বিদায়েরর পরের ওভারেই এরইউকে বিদায় দেন বাংলাদেশের স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। মিরাজের ঘুর্ণিতে বোল্ড হন এরইউ। ৬টি চারে ১০২ বল খেলে ৪১ রান করেন তিনি। ফলে ১১৭ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন তেম্বা বাভুমা ও কিগার পিটারসেন। দুই ওপেনারের মত দলকে বড় জুটি এনে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন তারা। কিন্তু বেশি দূর একত্রে যেতে পারেননি তারা। সতীর্থের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউটের ফাঁদে পড়েন ৩৬ বলে ১৯ রান করা পিটারসেন। তৃতীয় উইকেটে ৭১ বলে ২৯ রান যোগ করেন তারা।
চতুর্থ উইকেটে বড় জুটির চেষ্টায় ছিলেন বাভুমা ও অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা রায়ান রিকেলটন। অবিচ্ছিন্ন থেকে চা-বিরতিতে যান তারা। এসময় দক্ষিণ আফ্রিকার রান ছিলো ৩ উইকেটে ১৬৫।
তবে বাভুমা-রিকেলটনের জুটিও বড় হতে পারেনি। চা-বিরতির পর এবাদত হোসেনের বলে পুল করতে গিয়ে মিড-অনে মোমিনুলকে ক্যাচ দেন রিকেলটন। ৪১ বল খেলে ৪টি চারে ২১ রান করেন রিকেলটন। চতুর্থ উইকেটে ৬৮ বলে ৩৪ রান তুলেন বাভুমা ও রিকেলটন।
দলীয় ১৮০ রানে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে রিকেলটন আউট হলে ক্রিজে বাভুমার সঙ্গী হন উইকেটরক্ষক কাইল ভেরেনি। আগের দুই জুটি চেষ্টা করেও যা পারেননি, বাভুমা ও ভেরেনি, সেটাই তরেছেন। বাংলাদেশের বোলারদের দক্ষতার সাথে সামলে নেন তারা। এতে দলের স্কোর ২শ পেরিয়ে যায়।
উইকেটে সেট হয়ে দলের স্কোরকে বড় করছিলেন বাভুমা ও ভেরেনি। জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরিও তুলে ফেলেন তারা। এই জুটিকে ভাঙ্গতে বোলিং আক্রমনে পরিবর্তনের সাথে আক্রমনাত্মক ফিল্ডিং সেটও করেন মোমিনুল।
কিন্তু আলো স্বল্পতার কারনে বেশ আগেভাগেই শেষ হয় প্রথম দিনের খেলা। ৭৬ দশমিক ৫ ওভারে শেষ হয় প্রথম দিনের খেলা। এর আগে দিনের শুরুতে সাইট-স্কিনের কারনে নির্ধারিত সময়ে শুরু হয়নি খেলা।
দিন শেষে বাভুমা ১১৯ বলে ৫৩ ও ভেরেনি ৬৪ বলে ২৭ রানে অপরাজিত আছেন। বাভুমা টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৮তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। বাভুমার ইনিংসে ৬টি ও ভেরেনির ইনিংসে ৩টি চার ছিলো।
বাংলাদেশের এবাদত-খালেদ ও মিরাজ ১টি করে উইকেট নেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে সিরিজ জয়ের নায়ক পেসার তাসকিন আহমেদ ১৮ ওভার বল করে ৫৮ রান দিয়ে উইকেট শুন্য ছিলেন।
স্কোর কার্ড :
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস :
এলগার ক লিটন ব খালেদ ৬৭
এরইউ বোল্ড মিরাজ ৪১
পিটারসেন রান আউট (মিরাজ) ১৯
বাভুমা অপরাজিত ৫৩
রিকেলটন ক মোমিনুল ব এবাদত ২১
ভেরেনি অপরাজিত ২৭
অতিরিক্ত (বা-২, লে বা-১, নো-২) ৫
মোট (৪ উইকেট, ৭৬.৫ ওভার) ২৩৩
উইকেট পতন : ১/১১৩ (এলগার), ২/১১৭ (এরইউ), ৩/১৪৬ (পিটারসেন), ৪/১৮০ (রিকেলটন)।
বাংলাদেশ বোলিং :
তাসকিন : ১৮-৩-৫৮-০ (নো-১),
এবাদত : ১৭-৬-৫৮-১,
খালেদ : ১২.৫-০-৪৯-১ (নো-১),
মিরাজ : ২৬-৪-৫৭-১,
মোমিনুল : ৩-০-৮-০।